মেয়েদের হুলুধ্বনির মধ্য দিয়ে এগিয়ে আসছে এক সুদৃশ্য চতুর্দোলা। বাড়ির বিশাল ফটক পেরিয়ে বিস্তৃত অঙ্গনে এসে নামল চতুর্দোলাটা। এতক্ষণের পরিশ্রমের পর একটু জিরিয়ে নিয়ে হাঁফ ছাড়তে লাগল বেয়ারার দল। শেষ বিকেলের আলোয় মাখামাখি অতবড় বাড়িটার অলিন্দে উঠানে আর প্রতিটি কোণায় কোণায় উপচে পড়ছে মানুষ। আত্মীয়স্বজন তো আছেই, তাছাড়াও রয়েছে বাইরের বহু অনাহৃত রবাহৃত। চতুর্দোলার পিছন পিছন আসা বরের সাজে এক দীর্ঘদেহী তরুণ, ঘোড়া থেকে নেমে বাড়ির কাছে এসে দাঁড়াল। প্রবেশদ্বারের মুখে। চতুর্দোলার সঙ্গে এতটা পথ হেঁটে এসেছেন শ্যামলাল। তিনি চতুর্দোলার পর্দা তুলে মৃদু স্বরে বললেন মাতু, ওঠ মা, আমরা পৌঁছে গেছি। ভিতরে কনের সাজে নয় পুরিয়ে আজই দশে পা দেওয়া মাতঙ্গিনী ঘুমিয়ে পড়েছিল। তাঁর সেজ মেয়ে। বধূবরণের শাঁখ বেজে উঠল। মেয়েটি পর্দার ফাঁক দিয়ে দেখতে পেল এক মধ্যবয়সী রমণী বরণডালা হাতে আসছেন তাঁর দিকে। একজন দাসী ক্ষিপ্র হাতে মাতুর সাজসজ্জা ঠিকঠাক করে দিল। 'শতপুত্রের জননী হও' বললেন সেই রমণী, মাতুকে। শুরু হল বরণ। বাড়ির এয়োরা সার দিয়ে দাঁড়িয়েছেন। হুলুধ্বনি চলছিলই। ঘোমটা ঢেকে চতুর্দোলার বাইরে এল মাতু। তার শুধু চিবুকখানি দেখা যাচ্ছে। ফিসফিসানি শুরু হল।