"শ্রেষ্ঠ গল্প" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ শিরােনামে কোনাে লেখকের গল্প-সংকলন প্রকাশিত হওয়া উচিত কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তােলা অসঙ্গত নয়। বিশেষত যখন এর ফলে একই লেখকের অন্য গল্পগুলিকে গৌণতর আখ্যা দেবার সুযােগ থেকে যায়। আমাদের স্বতঃপাঠবিমুখ তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের কথা বাদ দিলেও পরবর্তী প্রজন্মের লেখক ও গবেষকদের কাছে ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’-বহির্ভূত রচনাকর্মগুলাের অপাক্তেয় হয়ে পড়ার আশঙ্কাটি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া চলে না। এই ভীতিটা আরাে বাড়িয়ে দেয় বাঙালি সমাজে সর্বব্যাপ্ত একটি প্রবাদ। একটিমাত্র ভাত টিপেই নাকি বলে দেওয়া সম্ভব হাঁড়িভর্তি ভাতগুলাের সার্বিক অবস্থার কথা। তবে আশার কথা কোনাে-কোনাে গবেষক-সম্পাদক এবং সার্বভৌম পাঠক স্মরণে রাখতে পারেন যে, শিল্প বা সাহিত্য কোনাে সমধর্মী খাদ্যবস্তু নয়; বরং এক লেখকের দুইটি লেখা কখনােই পরস্পরের প্রােটোটাইপ হয় না। স্রষ্টা এক হলেও দুই সৃষ্টির মধ্যে থাকতে পারে দুরপনেয় ব্যবধান। ফলে প্রতিটি আলাদা আলাদা রচনার পাঠ ও ব্যাখ্যা স্বতন্ত্র মনােযােগের দাবিদার। তারা শ্রেষ্ঠ গল্প’ পাঠের পর লেখকের অন্য রচনার প্রতিও আগ্রহী হয়ে উঠবেন ধারণা করেই এই ধরনের সংকলন পরিকল্পিত হয়ে থাকে ।
আবদুশ শাকুর : জন্ম ১৯৪১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, নােয়াখালী জেলার রামেশ্বরপুর গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্সসহ এম.এ, হল্যান্ডের আই.এস.এস থেকে অর্থনীতিতে এম.এস। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপনা, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিসে যােগদান এবং বাংলাদেশ সরকারের সচিব হিসাবে অবসরগ্রহণ। পড়াশােনা করেন বিবিধ বিষয়ে এবং নানান ভাষায় লেখালেখির বিষয় কথাসাহিত্য, রবীন্দ্রনাথ, সংগীত, সমাজতত্ত্ব ও নিসর্গ। লেখেন ঢাকার অভিজাত সকল পত্র-পত্রিকায় এবং কলকাতার বিশিষ্ট মাসিক শহর একুশ শতক’ ও ‘মিলেমিশে’ ইত্যাদিতে। তাঁর প্রবন্ধগ্রন্থ ‘চিরনতুন রবীন্দ্রনাথ’ প্রকাশ করে বাংলা একাডেমী এবং সঙ্গীত সংবিৎ শিল্পকলা একাডেমী। বাকি গ্রন্থাবলির প্রকাশক ঢাকার মাওলা ব্রাদার্স, ঐতিহ্য, ও রােদেলা এবং কলকাতার দীপ প্রকাশন, প্রতিভাস ও একুশ শতক || আবদুশ শাকুর ১৯৭৯ সালে বাংলা একাডেমী। অ্যাওয়ার্ড' পান ছােটগল্পের জন্য। গল্পসমগ্র'র জন্য পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি থেকে ‘অমিয়ভূষণ পুরস্কার’ পান ২০০৩ সালে। ২০০৪ সালে প্রথম আলাে বর্ষসেরা বই’ পুরস্কার পান মননশীল প্রবন্ধগ্রন্থ ‘গােলাপসংগ্রহ’র জন্য। সামগ্রিক সাহিত্যকর্মের জন্য ২০০৯ সালে পান ‘অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার' এবং ২০১১ সালে ‘শ্রুতি সাংস্কৃতিক অ্যাকাডেমি পুরস্কার।