"মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম এর চিকিৎসা ও প্রেসক্রিপশন"বইটির ভূমিকা: বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশের সময় আমার ছােট বােন সৈয়দা আক্তারুন্নেছা (পিনু) আর ইহজগতে নেই। গত ১লা বৈশাখ, ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০১৩ খ্রি. তারিখ তার প্রথম হার্ট এটাক হওয়ার পর সিলেটের মীরের ময়দানস্থ এলাইড ক্রিটিকেল হসপিটালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন লাইফ সাপাের্টে রাখার পর আবার তার অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় বাসায় নিয়ে আসা হয়। তাকে হার্টের চিকিৎসা করানাের জন্যে ঢাকায় নিয়ে আসার কথা ছিল । কিন্তু ফুসফুস (লাঙ)-এর কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে ডাক্তারগণ একমাসের জন্যে ঢাকায় নিয়ে আসা স্থগিত করেন। বাসায় এসে কয়েক দিন স্বাভাবিক জীবনযাপন করে । হঠাৎ ১৮ই মে ২০১৩ খ্রি. তারিখ ভােরে খবর আসে তাকে পুনঃরায় ‘এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি ফজরের নামাজে মসজিদে থাকাবস্থায় বাসায় আবার খবর আসে সে আর ইহজগতে নেই। এইতাে মানুষের জীবন । যে বােন ডায়াবেটিক-এর চিকিৎসা করানাের জন্যে আমাকে ১৭ই জুলাই ২০০৫ খ্রি. সনে মৌলভীবাজার ডায়াবেটিক হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল । আর সে চিকিৎসা করানাে সত্ত্বেও চলে গেল। প্রথম যখন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তখন দেখেছি মুখে নল, নাকে নল, হাতে সেলাইনের ইনজেশন এবং তার দু’হাত দুদিকে বাঁধা। দেখে বুঝা যাচ্ছিল তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু করার কিছুই ছিল না। এর মধ্যে কথা বলা সম্ভব না হওয়ায় হাত খুলে দেয়ার পর সে লিখে জানিয়েছিল আমাদেরকে অর্থাৎ তার ভাই-বােনদেরকে যেন তার কাছে বসতে দেয়া হয়। পরেরবার হাসপাতালে ভর্তির পূর্বে ছেলেকে নাকি ওয়াদা। করিয়েছিল তার মুখে নাকে যেন কোন রকম নল ঢুকানাে না হয়। নল ঢুকানাে হলে সে মুখ দিয়ে আল্লাহকে ডাকতে পারে না। তখন সে পুরুষ চিকিৎসক নিষেধ করেছিল এবং বলেছিল তার কানের কাছে ইয়াছিন সূরা পাঠ করতে অথবা তার মােবাইলে রেকর্ড করা ‘ইয়াছিন সূরা তার কানের কাছে ছেড়ে রাখতে । তার ছেলে ওয়াদা রক্ষা করেছিল এবং কানে ইয়াছিন সূরা’ শুনাচ্ছিল । সে মুখে আল্লাহর নাম নিয়ে এবং কানে সূরা ইয়াছিন শুনে শুনে কিছু সময়ের মধ্যে ইহকাল ত্যাগ করেছিল। চিন্তার বিষয় ইসলামী শরিয়তের বিধি-বিধানের তােয়াক্কা না করে পাশ্চাত্য ধাঁচের বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় মানুষকে মৃত্যুর সময় লাইফ সাপাের্টে আইসিইউ-তে রেখে মুসলমানগণকে পরকালে যাওয়ার পূর্বে কি দিয়ে বিদায় দেয়া হচ্ছে?
Title
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম এর চিকিৎসা ও প্রেসক্রিপশন
সৈয়দ এনায়েত উল্লাহ(১৯৫১ - ২০২৪) সাবেক জেলা জজ ও সাবেক মহাপরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন। পেশায় একজন আইনজ্ঞ ও বিজ্ঞ বিচারক ছিলেন। জুডিশিয়াল সার্ভিস শেষে প্রায় ২ বছর দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে ইসলামের প্রতি অত্যন্ত অনুরক্ত, সচেতন ও আল্লাহভীরু ছিলেন। আকাবিরে তাবলীগ জামাতের দীর্ঘদিনের সাথী ও মুরুব্বি ছিলেন। দাওয়াতে ইসলামের খেদমতে বিভিন্ন সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রায় ১৫টি জনপ্রিয় বই লিখেছেন।