তিন নতুন ডুবুরির মত, বাতাসে ঝাঁপ দেবার ভয় যখন ভেঙে গেল, তখন চিত্রগ্রীবের ওড়ার বহরও বেড়ে চললো। হপ্তাখানেকের মধ্যে তার একটানা আধঘণ্টা পর্যন্ত ওড়বার শক্তি হল, বাড়ি ফিরে ছাতের উপর তখন সে বাপমায়ের মতনই অবলীলায় নামতে শিখলে, ছাতে পা ঠেকবার সময় তাল সামলাবার জন্য ভয়ে ডানার ঝটাপটি থেমে গেল। প্রথম প্রথম ওড়বার সময় বাপ মা তার সঙ্গে সঙ্গে থাকতো, এখন তাকে পিছনে ফেলে তারা আরও অনেক উপরে উড়ে যায় ৷ কিছুদিন আমি ভাবতুম এমনি করে তারা তাকে আরও উঁচুতে ওড়বার চেষ্টা করছে, কারণ ছেলে সর্বদাই বাপমায়ের সমান উঁচুতে ওড়বার চেষ্টা করতো। তখন মনে হত হয়ত গুরুজনেরা শিশুর সামনে একটা মহৎ দৃষ্টান্ত তুলে ধরছে! কিন্তু অবশেষে জ্যৈষ্ঠের শেষে একদিন আমার সে ধারণা নিম্নলিখিত বিষম ঘটনায় বিচলিত হল। চিত্রগ্রীব উঁচুতে উড়ছে; সে যত বড়, উঁচুতে ওঠার দরুণ তাকে তার অর্ধেক দেখাচ্ছে। তার উপরে তার বাপ মা উড়ছিল – মানুষের মুঠির মত তাদের দেখতে হয়েছে। চক্রাকারে তারা ঘুরছিল নাগরদোলার মত। তাদের সেই ঘোরা নিরর্থক একঘেয়ে মনে হল। সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলুম; তা ছাড়া অনেকক্ষণ উপর পানে একটানা চেয়ে থাকা কষ্টকর। দিগন্তের পানে যখন চোখ নামলো, তখন দৃষ্টি আবদ্ধ হল একটি কালো দাগের উপর সেই দাগ দ্রুতগতি অগ্রসর হচ্ছে আর প্রতি মুহূর্তে বড় হচ্ছে। অবাক হয়ে