১৯০৭। শ্রীঅরবিন্দ ঘোষ ছিলেন স্বদেশী ইংরেজি দৈনিক ‘বন্দেমাতরমের’ সম্পাদক। ‘বন্দেমাতরম্' পত্রিকায় একটি নিবন্ধ প্রকাশের অভিযোগে শ্রীঅরবিন্দকে রাজরোষে পড়তে হয়েছিল। রাজদ্রোহের অভিযোগ এনে শ্রীঅরবিন্দ ঘোষ, শ্রীহেমেন্দ্রনাথ বাগচি ও শ্রীঅপূর্বকৃষ্ণ বোসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল । মামলাটি শুনানির জন্য উঠেছিল তদানীন্তন কলকাতার চিফ্ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট মিঃ কিংসফোর্ডের আদালতে। সাক্ষ্য-সাবুদ নিয়ে মামলার রায় হয়েছিল ১৯০৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখে। এই মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য শ্রীবিপিনচন্দ্র পালকে সমন করা হয়েছিল। শ্রীবিপিনচন্দ্র পাল সাক্ষ্য দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে আদালত অবমাননার জন্য ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। কলকাতার চিহ্ন প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে যখন ‘বন্দেমাতরম্’ মামলাটির শুনানি চলছিল সেই সময় সুশীল সেন নামক একটি বালক আদালতকক্ষেই হঠাৎ বন্দেমাতরম্ স্লোগান দিয়ে উঠেছিল । বালক সুশীল সেনকে ধরে আনা হয় মিঃ কিংসফোর্ডের কাছে। চিফ্ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড সাহেব সুশীলকে ১৫ ঘা বেত্রদণ্ডে দণ্ডিত করেন । একটি বালককে এই ধরনের অমানুষিক দণ্ড দেওয়ায় বিপ্লবী দলের সদস্যরা খেপে উঠেছিলেন, চিফ্ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড সাহেবের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পর অনুশীলন সমিতির বিপ্লবী সদস্যরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন—যে ভাবেই হোক কিংসফোর্ড সাহেবকে হত্যা করে এই অপমানের প্রতিশোধ নেওয়া হবে ।