ঢাকা-জাহাঙ্গীর নগর। সুবাদারের প্রাসাদ। সামনে বিস্তৃত প্রাঙ্গণ। তারপর সড়ক। অনেক দূরে নদী। প্রাসাদের অলিন্দে একটি আরামপ্রদ আসনে বসে সেই নদী তীরবর্তী কর্মব্যস্ততা অবলোকন করছিল স্বয়ং সুবাদার আজিমউদ্দিন। গ্রীষ্মের উত্তপ্ত মধ্যাহ্ন অনেকটা গড়িয়ে গিয়েছে। তবু উষ্ণ বাতাসের হলকা এসে লাগছে চোখে মুখে। আগ্রার উত্তাপ অনেক গুণ বেশি। তবু সওয়া যায়। এখানকার গরম খালবিল নদীনালা থেকে যতটা সম্ভব জলীয়বাষ্প নিয়ে এসে শরীরকে অস্বস্তিতে ফেলে বড়। অথচ কেটে গেল প্রায় চার বছর। হ্যাঁ, আরও বেশ কয়েক বছর কাটাতে চায় সে। তার টাকার দরকার। হিন্দুস্থানের তথ্-তাউসে বাবাকে কিংবা নিজেকে বসাবার জন্যে অনেক-অনেক টাকার প্রয়োজন তার। বাংলার সুবাদার সে। কিন্তু তাই বলে, একথা ভুলতে পারে না যে, মুঘল বাদশাহ ঔরঙ্গজেবের পৌত্রও সে। তার পিতা বাদশাহের জীবিত পুত্রদের মধ্যে সবচেয়ে বড়। ভুলতে পারে না সে একথা-মুহূর্তের জন্যেও ভুলতে পারে না। তাই দূরে নদীর তীরে বড় বড় নৌকো আর জাহাজ নির্মাণরত সূত্রধরদের ব্যস্ততা তার মনকে নাড়া দেয় না। অথচ এই সূত্রধরেরা জগৎ বিখ্যাত। নদীতে ভাসমান গহনা নৌকোগুলোর বৈচিত্র্যও তার হৃদয়ে, শুধু আজ বলে নয়, প্রথম যখন এসেছিল তখনও