শহরে আগন্তুক ঢুকেছে। এসেছে রাতের ট্রেন ধরে। কমলাপুর স্টেশনে নেমেই প্রথমে নিজের দিকে তাকিয়েছে একবার। আগন্তুক কালো, ঋজু ও খর্বকায়। খয়েরি রঙের প্যান্টের উপরে অ্যাপ্রোনের মতো একটা ফতুয়া শরীরে। প্রশস্ত করোটিতে দু'টি কাটা দাগ। প্রায় গিরগিটির মতো লম্বা ঘাড়। ঝোপের মতো ভুরু, নিচের দুটো চোখের একটি কিছুটা অস্বাভাবিক। ডান চোখের মধ্যমণি নাই বলেই মনে হয়। হাত দুটো সাগর কলার মতো ঝুলছে। অস্বাভাবিক চোখটাকেই স্টেশন দেখার কাজে লাগাচ্ছে। দুম মেরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে হঠাৎ ব্যস্ত সে। খড়ের মতো অগোছালো চুলে চিরুনি চালায় ক্ষিপ্রতার সাথে। এক ফাঁকে চিরুনি চালায় দূর্বাঘাসের মতো ছাঁট করা ঘন দাড়িতে। এরপর হাতে তুলে নিল খয়েরি রঙের একটি ব্রিফকেস। সিনা উঁচু করে সাহসি এবং স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করে এবং মৃদু গলাখাকারি দিয়ে পরীক্ষা করে নিয়েছে নিজের কণ্ঠনালি। আগন্তুক বেঁটে হওয়ায় লম্বা করে পা ফেললেও এগোতে পারছে অল্প। অবশেষে স্টেশন ছেড়ে মিশে গেল জনমিছিলে। জনমিছিলের ঘনত্ব ছেড়ে অপেক্ষমান একটা কালো রঙের ক্যাবে উঠে বসল। শহরের নীরব একটা গলির প্রবেশমুখে ক্যাবটির গতি মন্থর হলে দরজা খোলে নেমে পড়ল। কালো রঙের ক্যাবটি গতি বাড়িয়ে সামনে এগোয়।