চামলা ভ্যালীর ডোরাকাটা ভূমিকা সাধারণভাবে সমস্ত বুনো জন্তুই মানুষকে এড়িয়ে চলে। বাঘ কি চিতাবাঘ ও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু কোনো কারণে জঙ্গলের স্বাভাবিক শিকার ধরার ক্ষমতা হারালে বাঘ কি চিতা বাধ্য হয়ে মানুষ মেরে খেতে আরম্ভ করে। বাঘ মানুষখেকো হয়ে ওঠে প্রধানত একটি কারণে। তবে সব কারণেরই শেষ কথা হল ওদের দৈহিক অপটুতা। প্রথম ও প্রধান কারণ হল মানুষের হাতে আহত হওয়া। দ্বিতীয় কারণ, শম্বর কি শুয়োর অথবা সজারু—যারা বাঘ-চিতাকে প্রত্যাঘাত করতে পারে। আর শেষ কারণটি হল কোনো উঁচু জায়গা থেকে পড়ে পা ভাঙলে বাঘ-চিতারা মানুষ মেরে খেতে বাধ্য হয়। একবার মানুষ মারা শুরু করলে মানুষের প্রতি যে সহজাত ভয় তা এদের কেটে যায়। আর তখন এরা হয়ে ওঠে বেপরোয়া। চিতা কিংবা বাঘ যখন মানুষখেকো হয়ে ওঠে, তখন সহায়সম্বলহীন নিরস্ত্র গ্রামের মানুষের কাছ তা এক বিভীষিকা হয়ে দাঁড়ায়। এদের দৌরাত্ম্যে গ্রাম্য জীবনের সামাজিক, আর্থিক ও স্বাস্থ্যের বনিয়াদ ভেঙে পড়ে। ভয় মানুষের মনের এত গভীরে ঢুকে যায় যে দুধের বাচ্চাটাও জোরে কাঁদতে সাহস করে না। এখানে যাঁদের লেখার অনুবাদ করেছি তাঁরা নিজের জীবন তুচ্ছ করে রাতদিন মানুষখেকো বাঘের পিছু নিয়ে, তাকে মেরে গ্রামের লোকের অশেষ উপকার করেছেন, কোনো রকম পারিতোষিকের তোয়াক্কা না করেই, আবার তার সাথে সাথে গ্রামের মানুষদের চরিত্রও সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তারই কিছু কিছু এখানে অনুবাদ করেছি। পাঠকের ভালো লাগলে পরিশ্রম সার্থক হবে। পবিত্রময় দত্ত