এই মুহূর্ত এই একটি মূহূর্ত চলে গেল, এটা কখনোই ফিরবে না আর, মুহূর্তই মূহূর্তের শেষ। এ-ভাবনাটা একদিকে একটা শূন্যতা নিয়ে আসে ; ঠিক। কিন্তু এইটেই তো আবার সঞ্চারক ভালোবাসারও বোধ? এইখানেই এটা শেষ, এ-কথা জানি বলেই নিঃশেষে পেতে চাই একে, কোনোখানে ফাঁক না রেখে, ভবিষ্যতের জন্য কিছু ফেলে না রেখে । আর তখন প্রতিটি মুহূর্তই হয়ে উঠতে পারে সুন্দর। আনন্দে সুন্দর, বিষাদে সুন্দর। এই মুহূর্ত কি ভবিষ্যৎ মুহূর্তের প্রতিশ্রুতি কোনো? না-ও হতে · পারে তা। বরং ভেবে নেওয়াই ভালো যে এ-অবস্থান প্রতিশ্রুতিহীন। তুমি বসে আছ, কিংবা আছ কোনো কাজের মধ্যে, আর তোমার সামনে, তোমার সঙ্গে, কোনো বন্ধু, কোনো নিকটজন বা আত্মজন, এ-মুহূর্তে তার নিবিড়তার কোনো শেষ নেই, সে বলছে, তুমি বলছ, কবিতার ভাষায় যেন মনে হচ্ছে, ‘জীবনে জীবনে তার শেষ নেই কোনো”, কিন্তু তখনই তুমি মনে মনে জান, অন্তত জানা ভালো যে এর শেষ আছে, এমন-কী পরের মুহূর্তটিই আসতে পারে বিপুল কোনো প্রতিঘাত নিয়ে, অনন্বয় নিয়ে। তাই প্রতিশ্রুতিহীন ভাবে, প্রত্যাশাহীন ভাবে, এই মুহূর্তটিকে তুমি ধরে নিতে চাও নিরাসক্ত কিন্তু কৃতজ্ঞ এক অঞ্জলিতে, আর তারপর কয়েকদিন কয়েকমাস কয়েকবছর পর তৈরি থাক সেই মুহূর্তটির জন্য, যখন তোমার এই ছেলেবন্ধু বা মেয়েবন্ধু, তোমার এই নিকটজন বা আত্মজন, তোমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, চিনতে পারছে না তোমাকে, স্বাভাবিক বা কৃত্রিম বিস্মরণে উপেক্ষা বা প্রত্যাখ্যান নিয়ে সরে যাচ্ছে তোমার সামনে থেকে। তখন কি তুমি মনে মনে একে ভাববে কোনো
জন্ম ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩২। তিনি একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কবি ও সাহিত্য সমালোচক। তিনি একজন বিশিষ্ট রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ। তাঁর প্রকৃত নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। যাদবপুর, দিল্লি ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপনাও করেছেন। বাবরের প্রার্থনা কাব্যগ্রন্থটির জন্য তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ খ্রিঃ লাভ করেন ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান ,জ্ঞানপীঠ পুরস্কার। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে, এ আমির আবরণ, উর্বশীর হাসি, ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ ইত্যাদি। শঙ্খ ঘোষ ১৯৫১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলায় কলা বিভাগে স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বঙ্গবাসী কলেজ, সিটি কলেজ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯২ সালে অবসর নেন। ১৯৬০ সালে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে আইওয়া রাইটার্স ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেন। তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়,শিমলাতে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ আডভান্স স্টাডিজ এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষকতা করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেকগুলো অনেকগুলো পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।