নাম দেখেই বুঝা যাচ্ছে রামাযানের তারাবীহ নামাজের উপর ভিত্তি করে পবিত্র আল-কুরআনের বক্তব্যের সারসংক্ষেপ করা এটি একটি মৌলিক গ্রন্থ। এ ধরণের বই শুধু বাংলা ভাষায় নয় বরং ইংরেজি ও আরবি ভাষায়ও লক্ষ্য করা যায় না। প্রসংগ বিবেচনায় দুই একটি বই কাছাকাছি হলেও বিষয় নির্বাচন, রচনা পদ্ধতি, আলোচনার ধরণ ও প্রকৃতিগতভাবে এ বইটিকে অনন্য করে তুলেছে। মূল বইটি তিনটি অধ্যায়ে বিভক্ত। প্রথম অধ্যায়ে তারাবীহ নামাজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, এ নামাজের শরয়ী উদ্দেশ্য এবং রামাযানের প্রস্তুতি পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়টি মূলতঃ এ বইয়ের প্রাণ। এখানে আল-কুরঅনের বক্তব্যকে অতি সংক্ষেপে ২৭টি পর্বে গড়ে ৬০০ শব্দের মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে এবং প্রত্যেক পর্বের শেষে ১০টি করে শিক্ষা উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ এভাবেই তারাবীহ নামাজে কুরআনের তেলাওয়াত সম্পন্ন করা হয়। এর মাধ্যমে একজন আরবি না জানা ব্যক্তিও কুরআনের বক্তব্য ও শিক্ষা সম্পর্কে অবহিত হবে এবং তারাবীহ নামাজে তার একাগ্রতাও বাড়বে। তৃতীয় অধ্যায়ে ফিতরা ও ঈদুল ফিতর সম্পর্কে অতি সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে যা আমাদের মাঝে প্রচলিত অনেক ভুল-ত্রুটি থেকে উত্তোরণের উপায় হবে। পরিশেষ বলব, কখনও কি ভেবে দেখেছেন খতমে তারাবীহতে যে তেলাওয়াত শুনি তাতে কী বলা হয়? একবারও কি ইচ্ছে করেনা জানতে? কিছুই যদি না বুঝি তাহলে রোযার ক্লান্তি শেষে মূল্যবান সময় ব্যয় করে খতমে তারাবীহতে দেয়া শ্রমটুকু কি অর্থহীন নয়? কী জবাব দিব আল্লাহর কাছে? এসব প্রশ্নের উত্তর ও মুক্তির উপায় হতে পারে এ বইটি।
ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া থেকে উসূলুদ্দিন ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের উপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকারী ড. মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক (ইসলামি শিক্ষা) হিসেবে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত আছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার দা‘ওয়াহ এ- ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ হতে অনার্স এবং মাস্টার্স উভয় পরীক্ষায় ১ম শ্রেণিতে ১ম স্থানসহ অনার্স পরীক্ষায় ফ্যাকাল্টি ফার্স্ট হওয়ায় তিনি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক দেয়া শিক্ষা ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মাননা “প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০০৬” অর্জন করেন। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত কামিল (ফিক্হ), কামিল (হাদিস) সহ অন্যান্য পরীক্ষাসমূহেও ১ম শ্রেণিসহ মেধাতালিকায় স্থান করে কৃতিত্বের সাথে উত্তির্ণ হন। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার এবং কনফারেন্সে ২৫টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। তিনি ইতিমধ্যে তুরস্ক, নাইজেরিয়া, মিশর, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদিআরব, বাহরাইন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া ও ইন্ডিয়া ভ্রমন করেছেন। এটি তাঁর লেখা দ্বিতীয় মৌলিক গ্রন্থ। তাঁর লেখা প্রকাশিত গ্রন্থ “তারাবীহতে পঠিত ধারাবাহিকতায় আল-কুরআনের বক্তব্য” এবং একটি অনুবাদগ্রন্থ ইতিমধ্যেই পাঠক সমাজে সাড়া জাগিয়েছে। আরো বেশ কয়েকটি মৌলিকগ্রন্থ প্রকাশের অপেক্ষায়। তাঁর লেখা ২৩টি গবেষণা প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রিসার্স জার্ণালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি জাতীয় বংলা এবং ইংরেজি দৈনিক পত্রিকাতেও নিয়মিত লেখালেখি করেন। ড. ওবায়দুল্লাহ ২৫ ডিসেম্বর ১৯৮০ ইং সালে সাতক্ষীরা জেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ আমিন উদ্দীন গাজী এবং মাতা মরহুমা সুফিয়া আমিন।