মাইল বিশেক দূরে অবস্থিত মাড়াবার গিরিগুহা ছাড়া চন্দ্রপুরের এখন আর কোন আকর্ষণ নেই। শহরের প্রান্ত ছুঁয়ে গেছে গঙ্গা নদী। নদীটা বেশ কয়েক মাইল ধরে প্রবাহিত হয়েছে এবং অকৃপণ উদারতায় নদীতীরে আবর্জনা ফেলেছে। ফলে যা হবার তাই, নদীতীরের আলাদা সতীত্ব নেই। গোসল করার মত কোন ঘাট নেই গঙ্গায়। কারণ গঙ্গা এখানে পতিতপাবনী নয়। নদীর কোন সৌন্দর্য নেই। চন্দ্রপুর বাগানের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে নদীর দু'পাশের বিস্তীর্ণ দৃশ্যাবলী। শহরের রাস্তা সরু। কয়েকটা মন্দির আছে বাগানের মধ্যে। কিন্তু বিগ্রহ না থাকায় সেগুলোর ব্যবহার করা হয় না। সুন্দর কয়েকটা বাড়ি আছে। কিন্তু তাও চট করে নজরে পড়ে না। হয় গাছ-গাছালির আড়ালে ঢাকা পড়েছে, নয়তো জমে থাকা আবর্জনার পচা গন্ধ পেরিয়ে কেউ সেখানে যায় না। চন্দ্রপুর কখনই বড় বা সুন্দর শহর ছিল না। এখনো তার কৌলিন্য নেই। তবে উত্তর ভারত থেকে দক্ষিণ ভারত পর্যন্ত যে রাজপথটা চলে গেছে শহরের অবস্থান তারই ধারে। দুশো বছর আগে এই সড়কের ধারে চন্দ্রপুর শহরটা কিছুটা সম্ভ্রম আদায় করতো। বাড়িগুলো সে আমলেই তৈরি। তখন থেকেই সাজিয়ে-গুছিয়ে সুন্দর করে রাখার ঝোঁক কমে গিয়েছিল। তাছাড়া গণতান্ত্রিক উপায়ে সব অঞ্চল সমানভাবে গড়েও তোলা হয়নি। সেই থেকে চন্দ্রপুরের বেহাল অবস্থা। কাঠের দেওয়ালগুলো মনে হয় যেন কাদালেপা।