ভূমিকা চিকিৎসাশাস্ত্র মূলত দাঁড়িয়ে আছে প্রাক্-নিদানিক (প্রি-ক্লিনিক) দুটি স্তম্ভ—শারীরক্রিয়া বিজ্ঞান (ফিজিওলজি) ও শারীরস্থানের অ্যানাটমির ওপর। অথচ ছাত্ররা এই দুটি গরিমাযুক্ত বিষয় ছেড়ে ছুটে যায় নিদানিক চিকিৎসা (ক্লিনিক্যাল মেডিসিন), যন্ত্র-উদ্ভূত চিকিৎসা (ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেডিসিন), বিশেষ করে শল্যচিকিৎসা (সার্জারি)-র দিকে। কারণ এতে আলাদিনের জাদু-প্রদীপ হাতাবার স্বপ্ন আছে। কিন্তু দিন পাল্টেছে বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতিতে। ডি. এন. এ., ক্লোনিং, অন্তরীক্ষ বিজ্ঞানে (স্পেস সায়েন্স), কোষ-কলা উদ্ভাবনায় (টিস্যু কালচার), বিজ্ঞানের বিভিন্ন ধারায় শারীরক্রিয়া বিজ্ঞানের প্রযুক্তি দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। ভবিষ্যতের মানব নিশ্চয়ই অবাক হবে না যদি পরীক্ষাগার থেকে রক্ত ও দুধের বিকল্প বেরোয়। পুস্তকটি রচনায় বেশ কিছু গ্রন্থের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। যেমন—ম্যাকডোনাল্ড, সি. সি. চ্যাটার্জি, ডিউকের অ্যানিম্যাল ফিজিওলজি। প্রশ্ন উঠবে, অ্যানিম্যাল ফিজিওলজি কেন? আমরা পশু থেকে উঠে এসেছি বলে পশু-প্রাণীদের অস্বীকার করি কিভাবে? এই পুস্তকটি রচনায় বিশেষভাবে সাহায্য নিয়েছি সরল ভাষায় লেখার জন্য রুশ ভদ্রলোকের একটি বইয়ের। ভদ্রলোকের নাম আমার মনে নেই, কিন্তু তাঁর সৃষ্টি আমার মনে গেঁথে আছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা, মানুষটি ওই শারীরক্রিয়া বিজ্ঞান পুস্তকটি রচনা করেছেন অষ্টম মানের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য! তাই ওই দেশের মানুষ যে সর্বপ্রথম চাঁদে পাড়ি দেবে সেটায় কিমাশ্চর্যমত পরম্-টা কোথায়? চাঁদে পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়েছিল মানব শারীরক্রিয়া বিজ্ঞানে যথোপযুক্ত ব্যুৎপত্তি অর্জনের পর। পুস্তকটি কাদের সাহায্য করবে? চিকিৎসাবিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, ভেটেরিনারি এবং বি. এসসি. শারীরক্রিয়া বিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রীদের (পাস ও অনার্স)। প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে সেই অধ্যায়টির বিষগত প্রশ্নাবলী (সাবজেক্টিভ) জুড়ে দেওয়া হয়েছে। অধ্যায়টি ভালোভাবে পাঠ করা থাকলে লক্ষ্যবস্তু প্রশ্নের (অবজেক্টিভ) উত্তর দিতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হবে না। বাংলা বৈজ্ঞানিক শব্দের ইংরেজি নাম ইংরেজি শব্দে ও অক্ষরে দেওয়া হয়েছে, যাতে সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ইংরেজি শব্দের জন্য হাতড়াতে না হয় ৷ এখন সবটাই পাঠকদের ওপর। কারণ বৃক্ষ, তুমি কি? ফলেন পরিচিয়তে। অলমিতি বিস্তারেন।