ভূমিকা গণনা করা ছিল আদিমতম গাণিতিক কর্মকাণ্ড। আদিম মানুষেরা পশু ও বাণিজ্যের হিসাব রাখতে গণনা শুরু করে। আদিম সংখ্যাব্যবস্থাগুলি প্রায় নিশ্চিতভাবেই ছিল এক বা দুই হাতের আঙুল ব্যবহার করে সৃষ্ট । বর্তমানের ৫ ও ১০ ভিত্তিক সংখ্যাব্যবস্থার বিস্তার এরই সাক্ষ্য দেয়। মানুষ যখন সংখ্যাগুলিকে বাস্তব বস্তু থেকে পৃথক ধারণা হিসেবে গণ্য করা হয় শিখর এবং যোগ,বিয়োগ,গুন,ভাগ এই চারটি মৌলিক অপারেশন বা প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করল, তখনই পাটিগণিতের যাত্রা শুরু হল। আর জ্যামিতির শুরু হয়েছিল রেখা ও বৃত্তের মত সরল ধারণাগুলি দিয়ে। মূলত শুরু দিকে গণিতকে শুধুমাত্র গাণিতিক শাস্ত্র হিসেবে গণ্য করা হত। সেসময় গণিত দর্শন ও বিজ্ঞানের চেয়ে কোন পৃথক শাস্ত্র ছিল না। পরবর্তীতে ১৭শ শতকে এসে আইজ্যাক নিউটন ও গটফ্রিড লাইবনিসের ক্যালকুলাস উদ্ভাবন এবং ১৮শ শতকে ওগুস্তাঁ লুইকোশি ও তাঁর সমসাময়িক গণিতবিদদের উদ্ভবিত কঠোর গাণিতিক বিশে-শণ পদ্ধতিগুলোর উদ্ভাবন গণিতকে একটি একক,স্বকীয় শাস্ত্রে পরিণত করে। আধুনিক বিজ্ঞানের জগতে গণিতকে বলা হ বিজ্ঞানের ভাষা। কারণ আধুণিক বিজ্ঞানের অন্যতম মাধ্যম কম্পিউটারের প্রধান ভাষা হিসেবে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন গানিতিক যুক্তি। ইংরেজী ভাষায় যাকে বলা হয় Mathematics । মূলত পরিমাণ,সংগঠন, পরিবর্তন ও স্থান বিষয়ক গবেষণাকেই গণিত বলা হয়ে থাকে। গণিতে সংখ্যা ও অণ্যান্য পরিমাপযোগ্য রাশি সমূহের মধ্যকার সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়। গণিতের সার্বজনীন ভাষা ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা এক অপরের সাথে ধারণার আদান প্রদান করেন। গণিত তাই বিজ্ঞানের ভাষা। গণিতকে বাদ দিয়ে কোন কিছুই সম্ভব হয় না। এই কারণে গণিতকে ভয় পেলে চলবে না। বরং গণিতের বিভিন্ন সমস্যাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। জয় করতে হবে গনিতের ভয়কে । এই বইতে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে গনিতের বিভিন্ন অবদানকে কেন্দ্র করে মজার সব সমস্যা ও তারে সমাধানগুলো অত্যন্ত সহজ আঙ্গিকে তুলে ধরা হয়েছে। ফলে গণিত যে আমাদের সাধারণ জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ন একটি অংশ সেটা প্রমাণের অপেক্ষায় রয়েছে। কইটি পড়ে সঠিকভাবে কাজে লাগালেই সেই প্রমাণ করা সম্ভব। বইটি ছোট বড় সকলের উপকারে লাগবে বলে আমার বিশ্বাস। -সেরাজুম মুনিরা মিতা অধরা ফার্স্ট লেইন, কলাবাগান,ঢাকা।