‘আমি জুনাইদ জামশেদ বলছি’ বইয়ের কিছু অংশঃ জুনাইদ জামশেদের আত্মকাহিনী ‘আমি কীভাবে দ্বীনের পথে এলাম? [পাকিস্তানের শিয়ালকোট জেলার সীরাত স্ট্যাডি সেন্টারে প্রদত্ত বয়ানের অনুবাদ] বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লী আলা রসূলিহিল কারীম। উপস্থিত সম্মানিত ভাই, বন্ধু, বয়োজ্যষ্ঠবৃন্দ ও আমার বোনেরা! আপনাদের সবাইকে আমার পক্ষ থেকে সালাম– আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আপনাদের এ নগরীতে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি সবার আগে আমার ভাই ও বন্ধু মাওলানা ইমরান বশীর সাহেবের শুকরিয়া আদায় করছি, আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে। যিনি আপনাদের সামনে আমাকে কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন। আমি উপস্থিত সকল ভাই ও বোনের শুকরিয়া আদায় করছি। আপনারা সবাই এখানে এসেছেন। আপনাদেরকে পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি। আপনাদেরকে দেখে আমার আহত হৃদয় কী পরিমাণ সান্ত্বনা পেয়েছে, তা আমি বলে বোঝাতে পারবো না। আপনাদের সামনে বয়ান করার ক্ষমতা আমার নেই। শুধু আল্লাহর কাছে এ দুআ করুন— আল্লাহ যেন আজকের এই আয়োজনের জন্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উত্তম বিনিময় দান করেন। আল্লাহ যেন নিজ যথোপযুক্ত শ্রেষ্ঠত্ব অনুপাতে উত্তম বিনিময় দান করেন। আপনারা মৌলভী ইমরান বশীর সাহেবের কাছ থেকে সবসময় দ্বীনি ও আত্মশুদ্ধিমূলক বয়ান শুনে থাকেন। জানি না, হঠাৎ কীভাবে যেন আমার শেষের কথাঃ ভাই! মিউজিক আত্মার খোরাক নয়। মিউজিক হলো প্রবৃত্তির খোরাক। এই মিউজিক অত্যন্ত বিপদজনক বিষ। এই বিষ যখন কারো ভেতরে প্রবেশ করে তখন সে বোঝে না- এই গান। তার কী পরিমাণ ক্ষতি করে ফেলছে! বিশ্বাস করুন, আপনি যদি কোনো বুযুর্গের কাছে গিয়ে দ্বীনি বয়ান শোনেন, এরপর মাত্র পাঁচ মিনিট কোনো গান শোনেন তাহলে এতোক্ষণের পুরো বয়ান ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। মিউজিক হালাল না হারাম- সেই তর্কে আমি যাচ্ছি না। আমি শুধু আপনাকে মিউজিকের খারাপ দিক জানাচ্ছি, যা বাস্তবে ঘটছে। আমাকে আমার এক বন্ধু পরামর্শ দিয়েছে, দোস্ত! এক কাজ কর।একদিকে ওখানে গিয়ে গান গাইবে। আরেক দিকে এখানে এসে আযান দেবে। আমি তাকে বলেছি, এমনটি কখনই সম্ভব নয়। যে ব্যক্তি প্রবৃত্তিপূজারী গান-সঙ্গীতে অভ্যস্ত তার কাছে আযানের শব্দ ভীষণ অপছন্দ। নাউজুবিল্লাহ। আমার পরিষ্কার মনে আছে। আমি যখন আমার আগের জীবনে ছিলাম, কনসার্ট করতাম তখন যদি আশপাশের কোনো মসজিদে থেকে মাগরিবের আযানের শব্দ ভেসে আসতো বিশ্বাস করুন, ওই আযানের শব্দ আমাদের বুক এফোড়-ওফোড় করে বেরিয়ে যেতো। কারণ, আমরা কনসার্ট নামের একটি ভীষণ মন্দ কাজে লিপ্ত। আর আযান আমাদেরকে এর বিপরীতে কল্যাণের দিকে আহ্বান করছে। যার কারণে আমরা কখনই আযানের শব্দ সহ্য করতে পারতাম না।
আবদুল্লাহ আল ফারুকঃ লেখক, অনুবাদক, মুহাদ্দিস, সম্পাদক। পিতা : মাওলানা দেলাওয়ার হুসাইন সাইফী। মাতা : মুসাম্মাৎ রেদওয়ানুল জান্নাত জন্ম : ২২ নভেম্বর ১৯৮৩ ঈ.। খিলগাঁও, ঢাকা। শিক্ষা : দাওরায়ে হাদিস, আরবি সাহিত্য ও ইফতা. দারুল উলুম দেওবন্দ, ভারত। পেশা : লেখালেখি, শিক্ষকতা। লেখালেখি : লেখেন কবিতা, অনুবাদ ও কলাম। বই, দেয়ালিকা ও সাময়িকী সম্পাদনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। মুহাদ্দিস হিসেবে জামেয়া মাদানিয়া বারিধারা ও দারুল উলুম রামপুরায় কর্মরত ছিলেন। ছাত্রজীবনেই লেখালেখির সূচনা। প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার স্মারকে। বিভিন্ন মাসিক পত্রিকা ও স্মরণিকায় প্রবন্ধ, কবিতা ও অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আরবি ও উরদু থেকে অনুবাদ করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বােধ করেন। তার অনূদিত শিশুতােষ বইগুলােও বেশ জনপ্রিয়। সাইয়্যেদ মানাযির আহসান গিলানী, শায়খ হিফযুর রহমান সিওহারভী, মাওলানা ইদরিস কান্ধলভী, মুহাদ্দিস আবদুর রশীদ নু'মানী, শাইখুল হাদীস যাকারিয়া কান্ধলভী, সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী, মুফতী তাকী উসমানী, শায়খ যুলফিকার আহমদ নকশবন্দীসহ বরেণ্যদের বেশ কিছু বইয়ের সার্থক অনুবাদ করেছেন। আরবি থেকে অনূদিত বইয়ের সম্ভারও বেশ ঋদ্ধ। আবদুত তাওয়াব। ইউসুফ, সামাহ কামেল, সামীর হালবী, আহমদ তাম্মাম, সালামা মুহাম্মদসহ আরববিশ্বের বেশ ক’জন খ্যাতিমান লেখকের বইও অনুবাদ করেছেন। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ইতােমধ্যে ৪৪ পেরিয়েছে। আকাবিরের জীবন ও কর্মের ওপর কয়েকটি জীবনী ও স্মারকগ্রন্থ অনুবাদ ও সম্পাদনা করেছেন।