ছােটবেলায় ইসলামিক জলসা ও ওয়াজ মাহফিলে গেলে মাওলানা সাহেবরা বিভিন্ন নবী ও রাসুলদের কথা বয়ান করতেন। হজরত আদম (আঃ) থেকে শুরু করে হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) পর্যন্ত বলতেন। তখন মনে হতাে সকলেই বােধহয় একই সময়ের লােক। তাদের সামাজিক অবস্থা শিক্ষাদীক্ষা, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, পােশাক-পরিচ্ছদ, বাসস্থান বােধহয় একই ধরনের হবে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেখতে পাই যে দেশের অবস্থা অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত পরিবর্তন হয়। এতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর বিভিন্ন পরিবর্তন কীভাবে হচ্ছে তা জানার প্রয়ােজনীয়তা উপলব্ধি করি। পৃথিবীতে মানব বসতির সময়কাল, শিকার আরম্ভের সময়কাল, পুরাতন পাথরের যুগ নতুন পাথরের যুগ ঘর-বাড়ি নির্মাণ তাম্র ও লৌহ যুগ আদি রাজতন্ত্রের যুগ দেবতাদের মন্দির নির্মাণ যুদ্ধাস্ত্র তৈরি ও নেতাদের উদ্ভব উপনিবেশ স্থাপন অর্থবিত্ত অর্জন সবল জাতি অপেক্ষাকৃত দুর্বল জাতির ওপর প্রাধান্য বিস্তার ইত্যাদি আবহমান কাল থেকে চলে আসছে।
আধুনিক যুগে প্রাগৈতিহাসিক যুগের মানুষের ব্যবহৃত জিনিসপত্রের সময়কাল সঠিকভাবে নির্ণয় করা এবং তা ধারাবাহিকভাবে বর্তমান শিক্ষার্থীদের কাছে উপস্থাপন করা খুবই প্রয়ােজন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সভ্যতা ও মানুষের ব্যবহৃত নিদর্শনসমূহের সময়কাল স্পষ্ট হচ্ছে। গবেষক এবং ইতিহাসবিদদের দায়িত্ব নির্ভুলভাবে ইতিহাস লিখে প্রকাশ করা। এতে আদিকাল থেকে ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে লিখিত হবে এবং তা বিভিন্ন ছবি ও সময়কালসহ বর্তমান মানুষের হাতে পৌছবে। ফলে আদি-অন্তের ইতিহাস মানুষের চোখের সামনে স্পষ্ট হবে। রােম শহর একদিনে গড়ে ওঠে নি। তেমনিভাবে কোটি কোটি বছর আগে পৃথিবীর জন্ম হয়েছে এবং এর নিদর্শন পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। পরিবর্তিত পৃথিবীর কথা মানুষের সামনে দিনের আলাের মতাে স্পষ্ট হবে-এটা সবার প্রত্যাশা। হৃদয়ের এ আকুলতা থেকেই বইটি লেখা হয়েছে। আমি প্রকৌশলী হলেও সারা জীবন আমি যেখানে যে ইতিহাসের বই পেয়েছি তা সংগ্রহ করেছি। অবসর সময়ে আমি এইসব বই পড়ি।