ইতিহাস বিজয়ী আর বিজয়কেই ফলাও করে; পরাজয় আর পরাজিতকে ঢেকে রাখে বিস্মৃতির আড়ালে; কিন্তু কোনো কোনো পরাজয় ও পরাজিত পক্ষ এতই মহিয়ান হয়, তা গৌরবের দিক দিয়ে অনেক বিজয়কে ছাড়িয়ে যায়—দূর বহু দূর। ইতিহাসের তেমনই পরাজিত এক মহানায়ক সুলতান জালালুদ্দিন খাওয়ারিজমশাহ। জালালুদ্দিন ছিলেন খাওয়ারিজম সাম্রাজ্যের শেষ সুলতান। তিনিই তাতারদের প্রথম প্রতিরোধকারী। গ্রন্থটি তাঁকে নিয়েই রচিত। তবে খাওয়ারিজম সাম্রাজের ইতিহাসও সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণিত হয়েছে গ্রন্থটিতে। তাতারঝড়ে যখন গোটা মুসলিমবিশ্ব লন্ডভন্ড, ঠিক সে মুহূর্তে ধুমকেতু হয়ে আবির্ভূত হন মুসলিমবিশ্বের ত্রাতা হিসেবে। তাতারদের মোকাবিলায় তাঁর প্রতিরোধযুদ্ধ অসফল হলেও ব্যর্থ ছিল না মোটেও। অন্তত সাত-আটটি বছর তিনি আটকে রাখেন তাদের বিজয়ের স্রোত। দৌড়ের ওপর রাখতে সক্ষম হন সেই বিশ্বত্রাস শক্তিকে। এই রক্তপিপাসুদের নিজের সঙ্গে ব্যস্ত রেখে দিয়ে গেছেন বাগদাদের খিলাফত, হারামাইন, মুসলিমবিশ্বসহ মানবসভ্যতার সুরক্ষা। সিন্ধু নদের তীরে বীরত্বের যে মহাকাব্য রচনা করেছিলেন এই অমর বীর, তা চিরকাল মুজাহিদদের জন্য হয়ে থাকবে প্রেরণার উৎস। ইতিহাসের মাজলুম সেই মহান সুলতানের জীবনালেখ্যই ফুটে উঠেছে এই গ্রন্থে।
নাম মুহাম্মদ ইসমাইল। ‘ইসমাইল রেহান’ তার কলমি নাম। হাফেজ, মাওলানা। জন্মেছেন করাচীতে। পহেলা ফেব্রুয়ারি, ১৯৭১। বাবা আব্দুল আজিজ। তার পূর্বপুরুষরা দেশভাগের সময় ইসলামি দেশে বসবাসের জন্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে পাকিস্তানে হিজরত করেন। করাচীর পুরনো গোলিমার এলাকায় বড় হয়েছেন। মায়ের কাছে দ্বীনিয়াত বিষয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় স্কুলে ফরমাল এডুকেশন গ্রহন করেন। ১৯৮৬ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ভর্তি হন দারুল উলুম করাচীতে। বাহাদুরাবাদের জামেয়া মা’হাদুল খলীল আল ইসলামী থেকে ১৯৯৫ সালে তাকমীল সমাপন করেন। এর মাঝে আল্লামা আবদুর রশীদ নু’মানীর শিষ্যত্ব অর্জন করেন। তারপর ২০০৬ সালে করাচী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে বি.এ (সম্মান) এবং ২০১০ সালে করাচীর উর্দু বিশ্ববিদ্যালয় (FUUAST) থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি সমাপ্ত করেন। দীর্ঘ দুই দশক ধরে শিক্ষকতা করে আসছেন। ‘যরবে মুমিন’ ও ‘রোজনামা ইসলাম’ পত্রিকায় কলাম লিখে বিখ্যাত হয়েছেন। ২০০৬ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত মাসিক সুলূক ও ইহসান পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। শিশুদের জন্য প্রকাশিত একটি পত্রিকা ‘বাচ্চোঁ কা ইসলাম’ ও নারীদের নিয়ে প্রকাশিত ‘খাওয়াতিন কা ইসলাম’ পত্রিকার সম্পাদনা র সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।