গণেশখণ্ড - প্রথম অধ্যায় নারায়ণ, নরোত্তম, নর ও দেবী সরস্বতীকে প্রণাম করার পরে পুরাণ কীর্ত্তন করবে। নারায়ণ বললেন হে প্রভু! আমি এতক্ষণ অমৃতসাগরের মত সর্বশ্রেষ্ঠ প্রকৃতিখণ্ড শুনলাম, যা সকলেরই বাঞ্ছিত ও যা শুনলে মূর্খদের জ্ঞান বাড়ে। এখন আমার গণেশখণ্ড শোনার ইচ্ছে হচ্ছে। গণেশের জন্মের কাহিনী শুনলে মানুষের অশেষ কল্যাণ হয়। পার্বতীর গর্ভ ছাড়াই কিভাবে দেবতা শ্রেষ্ঠ গণেশ জন্মালেন ? আর দেবী বা কিভাবে সেই পুত্ররত্ন লাভ করলেন ? তিনি কোন্ দেবতার অংশ ? আর কেনই বা তিনি জন্মের যে দুঃসহ কষ্ট তা ভোগ করলেন ? তাঁর কি কোন যোনি থেকে জন্ম হয়েছে না হয়নি ? জগতের সৃষ্টি-স্থিতি ও ধ্বংসের কর্তা ব্রহ্মা-বিষ্ণু ও শিব থাকতেও পৃথিবীতে সবার আগে তাঁর পূজো হবার কারণ কি ? পুরাণে তাঁর জন্মের নিগূঢ় কাহিনী বলা আছে, কেন তার বিশাল উদর, একটি দাঁত ও মুখ হাতীর হল ? হে মহান্ ! এই সমস্ত আমি শোনার জন্য খুব কৌতূহল বোধ করছি, সমস্ত ব্যাপারটা আমাকে খুলে বলুন। নারায়ণ বললেন হে নারদ! আমি এখন সেই বিষয় বলছি, যা সমস্ত রকম বিপদ দূর করে, দুঃখ ও পাপ হরণ করে, সমস্ত মঙ্গল দান করে, যা সমস্ত কিছুর মূল, যা শুনতে ভাল, সুখদেয়, মোক্ষের মূল কারণ, কর্মের বাঁধন ছেদ করে ও পরম অদ্ভুত। তুমি শোন, নারায়ণ বললেন হে নারদ! আমি তোমায় এমন একটা আশ্চর্য রহস্য উপাখ্যান বলছি যা সমস্ত বিপদ, সমস্ত শোক, তাপ দূর করে। যারা এই উপাখ্যান শোনে তাদের সব দিক দিয়ে মঙ্গল হয়, এই উপাখ্যান সমস্ত উপাখ্যানের সার, শ্রুতি সুখকর, মঙ্গলদায়ক, মোক্ষের কারণ ও কর্ম বন্ধন ছেদ করে। দৈত্যরা দেবতাদের তাড়িয়ে দিলে দেবতাদের তেজের থেকে যে দেবীর আবির্ভাব হল সেই দেবী সমস্ত দৈত্যদের হত্যা করে প্রজাপতি দক্ষের মেয়ে হয়ে জন্মালেন। সেই সময় তাঁর নাম হয় সতী। পুরাকালে সতী, স্বামীর নিন্দায় যোগ বলে শরীর ত্যাগ করে, পর্বতরাজ হিমালয়ের পত্নী মেনকার গর্ভে জন্ম নিলেন।