‘বাইসাইকেল থিভস্’ বইয়ের ভিতরের কিছু লেখা "দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শেষ । মুসোলিনি এবং হিটলারের যুক্ত নাৎসি বাহিনী পরাজিত। রোম তথা ইতালি তখন মিত্রপক্ষের আমেরিকার এবং ইংরেজ সৈনিকদের অধিকারে। এই প্রেক্ষাপটে লেখক আণুবীক্ষণিক দক্ষতায় পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুন্দর এবং প্রাচীন নগরী রোমের ইতিকথা নৈর্ব্যক্তিকভাবে উপস্থাপিত করেছেন। রোম শহরের গলিঘুঁজি, চৌরাস্তা, চত্বর, তার অন্ধকার জগৎ, চোর-জোচ্চোর চোরাই মালের বাজার, বেশ্যালয়, লুম্পেন ও বুদ্ধিজীবীরা আমাদের চোখের উপর উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একদিকে যুদ্ধপরবর্তী নিঃসীম দারিদ্র, ভয়াবহ বেকারি, মানুষের চিরন্তন নীতি ও মূল্যবোধের পরিবর্তন, অন্যদিকে সীমাহীন ভোগ—এই সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চোর জোচ্চর, ঠকবাজ, সরকারী প্রশাসন, বেশ্যা, মধ্যবিত্ত, বুদ্ধিজীবি, রাস্তার লুম্পেন, সমস্ত চরিত্রগুলোকেই এক আশ্চর্য মমতায় বিধৃত করেছেন লেখক। উন্মোচন করেছেন এই ভয়াবহ যুদ্ধ, শোষণ এবং সামাজিক অব্যবস্থার পিছনে বস্তুতান্ত্রিক ভোগবাদী সভ্যতার দুর্নীতি ও তার নিষ্ঠুর নির্দয় রূপ। আমাদের চোখের সামনে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে সেই সময়কার রোম তথা সমগ্র ইতালির বাস্তব অবস্থা। এই উপন্যাসকে ভিত্তি করেই রূপায়িত হয়েছে বহু আর্ন্তজাতিক পুরস্কার নন্দিত পরিচালক ভিত্তোরিও ডি. সিকার বিখ্যাত ইতালীয় চলচ্চিত্র 'বাইসাইকেল থিফ'।"