ফ্ল্যাপে লিখা কথা সাইকেল চালিয়ে আর পায়ে হেঁটে ৩৮টি দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ক’জন বাঙালির আছে ? চৌদ্দ কোটি মানুষের এই বাংলাদেশে আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল ছাড়া আর একজনকেও বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবে না, যিনি মাত্র ৩০ বছর বয়সে ৩৮টি দেশের ধুলো-মাটি-জল-কাদা পায়ে মেখেছেন। সরকারী সফরে কিংবা কাজে-বাজে অনেকেই বিদেশ যান। ফিরে এসে সাতকাহন লেখেনও অনেকেই। সেগুলোও ভ্রমণ-কাহিনী নামে বাজারে বিকোয়। না, উজ্জ্বল তেমন ঘটনাচক্রে ভ্রমণকারী নন। ভ্রমনে সাতচক্রে বাঁধা তাঁর জীবন। ভ্রমণ তাঁর নেশা, পৃথিবী তার পাঠ্য। বয়স যখন তাঁর ২৪, তখনেই সাইকেলে চেপে বেরিয়ে পড়েছিলেন অজানা পৃথিবীর উদ্দেশ্যে। আর পেছন ফিরে তাকাননি। ঘরকুনো বাঙালির বদনাম ঘোচাতে দেশের পর দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন আর সঞ্চয়ের ভাঁড়ারে জড়ো করেছেন বিচিত্র অভিজ্ঞতা। সেই সব অভিজ্ঞতারই দলিল ‘সঙ্গী সাইকেল ও আরাধ্য পৃথিবী’ । এই বইয়ে ইরান, কুয়েত,তুরস্ক, গ্রীস, ইতালি, ভ্যাটিকান সিটি, ডেনমার্ক,-এই সাতটি দেশের ভ্রমণ -অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করেছেন লেখক। মাত্র নয়’শ পঞ্চাশ ডলার সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ শুরু করে কীভাবে উজ্জ্বল পৃথিবীর ৩৮টি দেশ ঘুরে আসতে পারলেন, এই প্রশ্ন বিশ্বের বড় বড় ভ্রমণকারীরও তাঁকে করেছেন। ইচ্ছে থাকলে কী-ই না সম্ভব? কত দুর্গম পথই না সহজ হয়ে ধরা দেয় পায়ে, কত দুর্ধর্ষ মানুষই না বন্ধু হয়ে ওঠে। শত জাতি আর সহস্র জনপদের সমষ্টি এই পৃথিবী। কত-শত খাল-বিল-নদী-নালা-পাহাড়-পর্বত-বনরাজি নিয়ে তার কারবার। অসংখ্য-অজস্র-পশু-পাখি-কীট-পতঙ্গকে নিয়ে তার ঘর-সংসার। বিপুলা এই পৃথিবীই আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বলের আরাধ্য। মানুষই সেই পৃথিবীকে সাজিয়েছে হাজার বছর ধরে; আবার মানুষই ধ্বংস করেছে তার প্রকৃতিকে। অপার বিস্ময়ভরা চোখে সেই পৃথিবীকে ঘুরে দ্যাখাই উজ্জ্বলের জীবনের মহত্তম কাজ। আর তারই প্রতিচ্ছবি এই বই। অজানা পৃথিবীর প্রতি যাদের মনে আছে অদম্য জিজ্ঞাসা, সঙ্গী সাইকেল ও আরাধ্য পৃথিবী তাদেরই জন্য লেখা।
সূচিপত্র * ভূমিকা * পরিব্রাজকের কথা * কবিতীর্থ ইরান * কুয়েত : পরিব্রাকের পরিবেদনা * তুরস্ক : কামাল আতাতুর্কের দেশে * মহামানবের মিলনক্ষেত্র : গ্রীস * লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি, সেফিয়া লরেন, গ্যারিবল্ডির দেশ : ইতারি * হিপ্পিদের স্বর্গ : ডেনমার্ক