"কাশ্মীর থেকে মিয়ানমার" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ পাঠক যদি লেখকের বর্ণনায় ভ্রমণ স্থলে না গিয়েও ভ্রমণের স্বাদ অনুভব করেন তাহলে সেখানেই লেখকের সার্থকতা। ‘কাশ্মীর থেকে মিয়ানমার’ তেমনই একটি ভ্রমণ কাহিনী। বইটি কি শুধুই ভ্রমণ কাহিনী? লেখক পেশাগত কাজে, সেমিনারে এবং নিছক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়িয়েছেন। চোখে দেখেছেন আফ্রিকার বৈচিত্রময় পরিবেশ মরুভূমি, শ্বাপদ-সঙ্কুল বন-জঙ্গল, জন্তু-জানােয়ার। দেখেছেন আমেরিকা, ইউরােপ। ঘুরেছেন অস্ট্রেলিয়া এবং নিজ মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশ। যখন তিনি কাশ্মীর ভ্রমণ করেন তখন তার ভেতর প্রশ্ন জেগেছে, কাশ্মীর আসলে কার? লেখক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র। এজন্যই রাজনীতি না-করলেও কাশ্মীরের রাজনীতির অন্তহীন সমস্যার কথা তার কলম এড়ায়নি। কাশ্মীর ভ্রমণ নিয়ে লেখা বইটিতে যেমন এসেছে সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা; সেই সঙ্গে উঠে এসেছে ভৌগলিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমস্যার কথা। কাশ্মীর ভ্রমণের অল্প সময়ের ব্যবধানে তিনি ভ্রমণ করেছেন মিয়ানমার। আমাদের নিকট প্রতিবেশী হলেও এ দেশটি অনেকটাই অজানা দেশ। গতানুগতিক ভ্রমণ বৃত্তান্তের বাইরে তিনি অবলােকন করেছেন মিয়ানমারের মানুষের জীবন ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি। মিয়ানমারেও কাশ্মীরের মতাে রয়েছে রাজনৈতিক সঙ্কট। একেবারে মিল না থাকলেও কোথাও কোথাও সাদৃশ্য রয়েছে সেসব সঙ্কটের। মিয়ানমারের একটি প্রদেশ রাখাইন। সেখানে চলছে জাতিগত দাঙ্গা। হাজার হাজার রােহিঙ্গা মুসলমান অত্যাচারে দেশ ছেড়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। হত্যা, ধর্ষণসহ নানাবিধ নির্যাতনের শিকার রােহিঙ্গারা। লেখক মিয়ানমার ভ্রমণে গিয়ে সেখানকার প্রকৃতি, মানুষ, রাজনীতি, ধর্ম ইত্যাদি নিয়ে যেমন আলােকপাত করেছেন, তেমন রােহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বলেছেন নানা কথা। এ বইটি পাঠক প্রিয়তা পাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।