ফ্ল্যাপে লিখা কথা আনিস রহমান এ সময়ের গল্পকার, কিন্তু তার গল্পের অন্তর্জগৎ চিরকালীন , পরিচর্যা আধুনিক। মানব মনোলোকের দুর্জ্ঞেয় ও রহস্যময় সত্যকে তাঁর স্বরূপে তিনি সনাক্ত করতে চান তাঁর গল্পে। ফলে প্রতিটি গল্প স্বতন্ত্র হয়েও একধরনের পারস্পরিকতায় আবদ্ধ। কোন কোন গল্পে কাহিনী হয়তো পাওয়া যায়।, কিন্তু তা তার অন্বিষ্ট নয়। কখনো সূক্ষ্ণতম কোন অনুভূতি, কখনো চিন্তার কোন নতুন তরঙ্গ, কখনো পরিচিতি চিন্তার কোন নতুন তরঙ্গ, কখনো পরিচিত কোন দৃশ্যের অন্তরাল, নিসর্গের কোন অনুষঙ্গ, সমাজ বা রাজনীতির কোন মোচড় তাঁর গল্পের কেন্দ্রীয় উপজীব্য হয়ে ওঠে। ভাষার স্বাতন্ত্র ও সাবলীলতা তাঁকে সহায়তা করে, দার্শনিক প্রত্যয় তাঁর চৈতন্যের স্তরান্তর ঘটায়। পরিচিত মুখ ও পরিপার্শ্ব অপরিচয়ের অন্তরালে নিক্ষিপ্ত হয়ে রচনা করে এক অভিনব ও অদ্ভুত বিস্ময়। মানবিক মাধূর্য তাঁর প্রতিটা গল্পে তীব্র হয়ে ওঠে।
আনিস রহমানের জন্ম ২০ জানুয়ারি ১৯৬৪ ঢাকায়। গ্রাম-গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ। তিনি গল্প লিখছেন। মধ্য-আশি থেকে। যাপিত জীবনের ব্যক্তিক ও সামাজিক অভিজ্ঞতার সংবেদনশীল রূপায়নের জন্য তিনি প্রথম থেকেই চিহ্নিত হয়েছেন ব্যতিক্রমী একজন গল্প লেখক হিসেবে। এই অনন্যতা তার দৃষ্টিতে, চিত্রকল্প আনিসের। নদীর রূপােলী ধারা, বাঁক ফেরা তাকে মগ্ন করে, মুগ্ধ করে গভীর চেতনায়। তাই ফিরে ফিরে নদীর কাছে যাওয়া তার। অনন্য এক শখ। দীর্ঘ প্রায় এক দশক যুক্ত ছিলেন। সাংবাদিকতায়। সে সুবাদে জীবনের নানা অবয়ব কখনাে। তাকে করেছে আশাহত, কখনাে অর্ধ। কখনাে আবার স্বপ্ন দেখিয়েছে নতুন আগামীর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগােলে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর। পিএইচডি করেছেন জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। সংসার বন্ধু আশরাফ জঁহা এলি । শিক্ষকতা করেন একটি কলেজে। মেয়ে নিসর্গ মেঘেলা। ছেলে দিঘল অরণ্য কাব্য। প্রকাশিত গ্রন্থ : ছােটগল্প হেঁড়া পাঁজরের চিরকুট, ছায়া জুড়ে বিষন্নতা বাজে না মন্দিরা, ঈশ্বরের চিত্রনাট্য মন্ডপটিলার পার্শ্বচিত্র, তুলির ডগায় রঙ আকাশ কাকুর চিঠি, হৃদয়পুর গ্রেট দিপকদা, আঁকাজোকা মুখ। প্রবন্ধ: বাংলাদেশের উপন্যাসে ভূগােল চেতনা (১৯৪৭ ১৯৯০) কাল-সমকাল