টোটোপাড়ার ভূমিব্যবস্থা ১৯০৯ থেকে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলার ভূমি সংস্কার (District Settlement Officer) আধিকারিকের নেতৃত্বে ও তত্ত্বাবধানে টোটোপাড়ার ভূমির পূর্ণাঙ্গ সার্ভে বা সমীক্ষার কাজ সম্পন্ন হয়। সমীক্ষার পর উক্ত গ্রামটিতে ২০০৩ একর জমি নথিবদ্ধ করা হয়। তৎকালীন জলপাইগুড়ি জেলার ভূমি সংস্কার (Settlement Officer) আধিকারিক ছিলেন মি. মিলিগান। আর টোটোপাড়া গ্রামটির সমগ্র বাসিন্দাই ছিলেন টোটো জনগোষ্ঠীভুক্ত, এবং তাদের গোষ্ঠীপতি বা মণ্ডল (Headman),–টোটো ভাষায় ‘গপু’ ছিলেন ‘ডাঙ্গে মণ্ডল'। মি. মিলিগান টোটোপাড়ায় প্রাপ্ত সমস্ত ভূসম্পত্তি টোটোদের গোষ্ঠীপতি বা ‘গপু’র নামে জনগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পত্তি হিসাবে নথিভুক্ত করেন। তৎকালীন উপজাতি অধ্যুষিত পার্বত্য অঞ্চলের জন্য গৃহীত ব্রিটিশ সরকারের নীতি মেনেই টোটোপাড়ার ভূসম্পত্তির উপর কোনো ভূমিরাজস্ব ধার্য করা হয়নি। ব্রিটিশ শাসনতান্ত্রিক এলাকার অন্তর্ভুক্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নাগাল্যান্ড, খাসি, জয়ন্তিয়া পাহাড়ি অঞ্চলের বাসিন্দা উপজাতি জনগোষ্ঠীর ‘গোষ্ঠীসম্পত্তি’ থেকে ভূমি রাজস্ব আদায় করা হত না। বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে ঐসব অঞ্চলের মতো “টোটোদের দখলীকৃত ভূমির রাজস্বের পরিবর্তে প্রতিটি পারিবারিক গৃহের উপর ২ (দুই) টাকা হারে বাৎসরিক গৃহকর/সম্পত্তি কর ধার্য করা হয়, এবং উক্ত হারে প্রতিটি গৃহ থেকে কর সংগ্রহ করার অধিকার টোটোদের গোষ্ঠীপতি (Headman), বা ‘গপুকে' প্রদান করা হয়। সরকারি নিয়মানুসারে টোটো গোষ্ঠীপতি বা ‘গপু’ নির্ধারিত হারে গৃহকর সংগ্রহ করে বছরের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফালাকাটা তহশিল অফিসে জমা দিতে বাধ্য থাকবেন। বিনিময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে টোটো জনগোষ্ঠী টোটোপাড়ার সমস্ত ভূসম্পত্তি বংশপরম্পরায় স্ত্রী-পুত্রাদিসহ ভোগদখলের অধিকার লাভ করে।”৭ ঐ আদেশ ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চালু ছিল। টোটো গ্রামের মোট জমির মাত্র ২০ শতাংশ চাষযোগ্য ছিল, বাদবাকি অংশ নদী, বন, পাহাড়ের ঢাল ও পাথরপূর্ণ ছিল।