ভূমিকা গ্রন্থের প্রথম কয়েকটি অধ্যায়ে যেখানে তাত্ত্বিক আলোচনা স্থান পেয়েছে, যেমন তুলনামূলক শিক্ষার সংজ্ঞার বিবর্তন শিক্ষাব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক উপাদানসমূহের বিশ্লেষণ, তুলনামূলক বিচারের নানা দৃভঙ্গী, বিদ্যালয়-ও সমাজের পারস্পরিকতা ও মিথষ্ক্রিয়া ইত্যাদি, সেগুলির ক্ষেত্রে এই স্বল্পকালের মধ্যে বিশেষ কিছু পরিবর্তন ঘটার কথা নয়। এগুলি দীর্ঘকাল শিক্ষা-পরিমণ্ডলে শাশ্বত অর্থে ও মূল্যবোধে সংস্থিত থাকে। বিভিন্ন দেশে যে পরম্পরায় শিক্ষাপ্রণালী সংগঠিত ও বিবর্তিত হয়, তার পর্যালোচনার অবকাশে সময়বিশেষে কিছু কিছু পরিবর্তন চোখে পড়ে। কোন দেশে ঘটে আকস্মিক পরিবর্তন, কোথাও বা ধীর লয়ে বিভিন্ন ধারায় সূক্ষ্ম পরিবর্তন ঘটে চলে। উন্নত দেশগুলিতে যেহেতু বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা সংগঠনে ও সংস্কারে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়, সেই কারণে এগুলি পর্যালোচনার যোগ্য বিষয়। পূর্ববর্তী সংস্করণে সোভিয়েট রাশিয়ার যে শিক্ষাব্যবস্থা বর্ণিত হয়েছিল, পেরেস্ত্রোইকা-উত্তর বর্তমান রাশিয়ান ফেডারেশনে তার মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে, সেগুলি বর্তমান সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গৌণ হলেও কিছু পরিবর্তন ঘটেছে ইংলণ্ড, জার্মানি এবং অন্য কয়েকটি দেশেও। ভারতেও গত ৮/১০ বৎসরে অনেক ক্ষেত্রে কিছু সংস্কার ও নবরূপায়ণের প্রচেষ্টা হয়েছে, সেগুলিকেও শেষ অধ্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গ্রন্থকার হিসেবে আমি মনে করি, যথাসম্ভব আধুনিক তথ্যসমৃদ্ধ করে এই সংস্করণটিকে প্রকাশ করা হচ্ছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং শিক্ষকশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে কোথাও বা আবশ্যিক পাঠ্য হিসেবে, কোথাও আবশ্যিক -ঐচ্ছিক হিসেবে তুলনামূলক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আশা করা যায়, প্রাসঙ্গিক পাঠ্য হিসেবে এই বিষয়টির গুরুত্ব আরো বাড়বে। আগামী দিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে এই গ্রন্থটি সমাদৃত হলে আমাদের শ্রম সার্থক হবে।