সংস্কৃত পুঁথিবিদ্যা : তত্ত্ব ও প্রয়োগ প্রস্তাবনা (Introduction) প্রথম অধ্যায় সুদূর অতীতে বিদ্যার আলোকবর্তিকা প্রথম প্রজ্জ্বলিত হয়েছিলো পৃথিবীর যে কয়েকটি দেশে ভারতবর্ষ তাদের অন্যতম। ভারতীয় সভ্যতার প্রাচীন রূপটি বিধৃত আছে বিদ্যাচর্চায় ব্যবহৃত তার উপকরণসামগ্রীর বিচিত্র লেখমালার অভ্যন্তরে। শিক্ষা-সংস্কৃতির বিস্তীর্ণ ক্ষেত্রে প্রাগ্রসর ভূমিকার জন্যই প্রাচীন ভারতের গৌরবোজ্জ্বল অবস্থান আজও দিকে দিকে বন্দিত এবং চর্চার বিষয়রূপে পরিগৃহীত। সুপ্রাচীন ভারতবর্ষে বিদ্যাচর্চার ধারা অব্যাহত ছিলো গুরুশিষ্য পরম্পরায়। প্রথম যতোদিন লেখার উদ্ভব হয় নাই ততোদিন মুখে মুখেই চলেছে বিদ্যার আদান- প্রদান। বিদ্যাকে স্থায়ীভাবে ধরে রাখার জন্য লেখার উদ্ভব হয়েছে অনেক পরে। এবং বলা বাহুল্য, সেদিনের সেই উদ্ভাবন ছিলো এক যুগান্তকারী ঘটনা। কালপরিক্রমায় বিজ্ঞানের অগ্রগতি ঘটেছে এবং বিদ্যাচর্চার প্রকরণ-পদ্ধতির ক্ষেত্রেও বিপুল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ভাবপ্রকাশের জন্য মানুষের মুখনিঃসৃত ধ্বনির প্রতিরূপ হিসাবে উদ্ভাবিত হয়েছে বর্ণ বা অক্ষরের সমষ্টি। সেই অক্ষরকে যন্ত্রের মাধ্যমে অঙ্কিত বা মুদ্রিত করার জন্য আরও পরবর্তী সময়ে মুদ্রণযন্ত্রের আবির্ভাব হয়েছে। আজকের দিনে এইসব এক একটি আবিষ্কারের গুরুত্ব অনুধাবন করা বা তাকে অনুভবের মধ্যে উপস্থিত করা বেশ কষ্টকর ব্যাপার। কিন্তু এসব বাস্তব ঘটনা। একে অস্বীকার করা অসম্ভব। মনের ভাবপ্রকাশের মাধ্যম হিসাবে ভাষার আবিষ্কারের পর থেকেই নিজের অর্জিত জ্ঞানকে অন্যের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ও তাকে স্থায়ী করে রাখার নিরন্তর প্রয়াসের মধ্য দিয়ে মানবসভ্যতার অগ্রগতির ধারা অব্যাহত আছে।