শিক্ষার অহংকারে, সংস্কৃতির বিচ্ছুরণে, সমাজসংস্কারের প্রয়াসে এবং রাজনৈতিক আন্দোলনে যে পরিবার ছিল বাংলা তথা ভারতে অগ্রগণ্য, যে পরিবারের একাধিক কৃতি পুরুষ এবং নারী ব্যক্তিগত সাফল্যের ‘রত্নমুকুট' ধারণ করে লাভ করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি এবং স্বীকৃতি – এই হল সেই বহু আলোচিত ঠাকুরবাড়ির অনালোকিত অন্দরমহলের অভিশপ্ত গল্পকথা। এই বইয়ের পাতায় পাতায় বিবৃত হয়েছে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের অসহায় জননী অলোকাসুন্দরীর নির্মম অন্তর্জলী যাত্রা থেকে শিল্পাচার্য অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা শোকস্তব্ধা উমার আত্ম-কথন। পাঁচ প্রজন্মের নির্বাচিত একুশজন অনাদৃতা নারী নির্দ্বিধায় শুনিয়েছেন তাঁদের ফেলে আসা দিনযাপনের শোকাতুর কাহিনী যা পড়তে পড়তে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে, বাইরে যখন হাজার আলোর উৎসব তখন অন্দরমহল কেন মুখ ঢেকেছে অবহেলার অমানিশার নিঃসীম অন্ধকারে? যে সব্যসাচী সাহিত্যিক দুরন্ত বলাকার মতো এক বিতর্কিত বিষয়-সরোবর থেকে অন্য অনুদ্ঘাটিত কাহিনী – স্রোতস্বিনীতে অবগাহন করার সামর্থ্য ও স্পর্ধা রাখেন, সেই পৃথ্বীরাজ সেনের এবারে উপহার – ‘ঠাকুরবাড়ির বঞ্চিতা নারী'। দুই মলাটের রুদ্ধ কারায় বন্দী থাকুক একুশ নারীর হৃদয় থেকে উৎসারিত দীর্ঘশ্বাস আর নিরুচ্চার ব্যথার বুনন-কাঠিতে বোনা হাহাকারের নকশী কাঁথা। দরদী পাঠক, ক্ষণকালের জন্য কি তাঁদের সাথে নিমগ্ন হবেন না অন্তরঙ্গ আলাপনে?