ভূমিকা মানুষের শারীরবৃত্ত সম্পর্কে কোনও পাঠ্যবই নয় এই বই। এই বইকে বরং মানুষের শরীরপরিচয় বিষয়ক বই বলা যেতে পারে। মানুষের শরীরকে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ভাবে দেখেছেন। সাধুসন্ন্যাসীরা এক ভাবে দেখেছেন, দার্শনিকরা এক ভাবে দেখেছেন, বিজ্ঞানীরা এক ভাবে দেখেছেন। বিজ্ঞানীরাও সকলে সমান ভাবে দেখেন নি। এক-এক ধরনের বিজ্ঞানী এক-এক ভাবে দেখেছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা মানুষের শরীরকে দেখেছেন এক রকমের খোলক হিসাবে, যে খোলকের মধ্যে অনেক অঙ্গ আছে এবং যে কোনও মুহূর্তে সেই সব অঙ্গের একটা-না-একটা বিকল হয়ে যেতে পারে। জীববিজ্ঞানীরা মানুষের শরীরকে দেখেছেন একটা জীব হিসাবে, যে জীব কোটি কোটি বছর ধরে বিবর্তিত হয়েছে এবং এখনও বিবর্তিত হয়ে চলেছে। সুপ্রজননবিদ্যায় বিশেষত্ব লাভ করেছেন যে সব বিজ্ঞানী, মানুষের শরীরকে তারা একটা যন্ত্র হিসাবে দেখেছেন, যে যন্ত্র সযত্নে তার ভিন্ন ভিন্ন অংশের উন্নতিসাধন করে কিংবা ভিন্ন ভিন্ন অংশ প্রতিস্থাপন করে তার জীবনকাল বৃদ্ধি করতে পারে। কিন্তু বিশালসংখ্যক সাধারণ মানুষের কাছে মানুষের শরীর একটা বিস্ময়। তারা জানতে চায়, কী দিয়ে এই শরীর তৈরি, কী কী কলকবজা আছে এই শরীরের ভিতরে এবং সেই সব কলকবজার কোন্টার কোন্ কাজ। সেই জানার পথে দিকনির্দেশ এই বই। মানুষের শরীরের প্রধান প্রধান অঙ্গ আর প্রত্যঙ্গের পরিচয় ছাড়াও মানুষের গোটা শরীরের মোটামুটি পরিচয় আছে এই বইয়ে। সেই জন্যই এই বইকে শরীর পরিচয় বিষয়ক বই বলা যেতে পারে । এই বই রচনায় আমাকে উদ্দীপিত করেছেন এই বইয়ের প্রকাশক শ্রীভূমির কর্ণধার আমার বয়োজ্যেঠ বন্ধু শ্রীযুক্ত অরুণ পুরকায়স্থ। এই বইয়ে বহু ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, পারিভাষিক শব্দও ব্যবহার করা হয়েছে অনেক। পারিভাষিক শব্দ যেগুলি সাধারণ ভাবে প্রচলিত সেইগুলিই বিশেষ করে ব্যবহার করা হয়েছে, অন্যথায় বোঝার সুবিধার জন্য ইংরেজি শব্দই রাখা হয়েছে। ইংরেজি শব্দগুলি বাংলা হরফে লেখা হয়েছে অঙ্গসৌষ্ঠবের জন্য। কেউ যদি অ-সাধারণ ইংরেজি শব্দগুলি ইংরেজি (রোমান) হরফে দেখতে চান, গ্রন্থের শেষে একটি তালিকায় দেখতে পাবেন। গ্রন্থের শেষে স্বল্পপ্রচলিত পারিভাষিক শব্দগুলিও দেখতে পাবেন আর একটি তালিকায় ৷