হিজরি সপ্তম শতাব্দীতে মুসলিমবিশ্ব অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। একদিকে ফরাসি সম্রাট নবম লুইয়ের নেতৃত্বে ক্রুসেডাররা মানসুরায় যুদ্ধে লিপ্ত, পূর্বদিক থেকে ধেয়ে আসছে তাতারঝড়; বিপরীতে আইয়ুবিদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর খাওয়ারিজমিদের সম্প্রসারণবাদ। এই সঙ্গিন মুহূর্তে রণক্ষেত্রেই মৃত্যুবরণ করেন অকুতোভয় সুলতান নাজমুদ্দিন আইয়ুব। সুলতানের মৃত্যুতে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আগেই পুরো বিষয়টা দক্ষ হাতে সামাল দেন সুলতানপত্নী শাজারাতুত দুর। তাঁর দৃঢ় নেতৃত্ব ক্রুসেডারদের প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জনগণ তাঁর প্রতি ভীষণ মুগ্ধ হয়। এরপর নাজমুদ্দিন আইয়ুবের পুত্র সুলতান তুরানশাহ নিহত হলে ইসলামের ইতিহাসে প্রথম নারী শাসক হিসেবে তিনি শাসনমঞ্চে আরোহণ করেন। শাজারাতুদ দুর মাত্র কিছুদিন শাসনকাজ পরিচালনা করেন; কিন্তু এই অল্প কদিনেই তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন তাঁর অনন্য কীর্তির জন্য। এরপর আব্বাসি খিলাফতের সঙ্গে তাঁর ক্ষমতার স্বীকৃতির দ্বন্দ্ব, আলিমদের প্রতিবাদ আর মামলুকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে তিনি শাসনক্ষমতা হারান। তাঁর শেষ পরিণতিও ছিল অত্যন্ত করুণ। গ্রন্থটিতে তাঁর সুদক্ষ কৌশল ও দৃঢ় নেতৃত্বে ক্রুসেডারদের মোকাবিলা, মামলুকদের ঐক্যবদ্ধকরণে দূরদর্শী ভূমিকা, বিয়ে, সাম্রাজ্য পরিচালনা, মৃত্যু সবই স্থান পেয়েছে।