মানুষের কাজের সুবিধার্থে আল্লাহ সময়কে দুভাগে ভাগ করেছেন। সময়ের একটি অংশকে আমরা দিন; আরেক অংশকে বলি রাত। দিন-রাতের আবর্তে ৭ দিনে হয় এক সপ্তাহ। ৩০ দিনে ১ মাস। ৩৬৫ দিনে ১ বছর। ১ বছরে মোট মাস ১২টি। আল্লাহ তাআলা অনুগ্রহ করে বিশেষ কিছু দিন আর রাতকে আমাদের জন্য সম্মানিত করে দিয়েছেন, যে দিন বা রাতের মর্যাদা তাঁর কাছে অন্যান্য দিন এবং রাত থেকে অনেক বেশি। যেমন : শবেকদর হাজার মাস থেকে উত্তম। আরাফার দিনের রোজা পূর্বের ও পরের ২ বছরের গুনাহের (সগিরা) কাফফারা হয়ে যায়। কিছু মাসের বিশেষ আমল যেমনভাবে সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, ঠিক তেমনিভাবে আমাদের সমাজে কিছু মাসে এমন বহু আমল প্রচলিত, যেগুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট; কুরআন-হাদিসের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। বিশেষ কোনো মাস বা দিনের কোন ফজিলত সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, কোনটা প্রমাণিত নয়; এ গ্রন্থ আপনাকে সে সম্পর্কে পথপ্রদর্শন করবে ইনশাআল্লাহ। এ বিষয়ে লিখিত অন্যান্য গ্রন্থের তুলনায় এটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। গ্রন্থটিতে প্রতিটি আয়াত, হাদিস, আসারের তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়েছে, হাদিস নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ আমাদের প্রত্যেকের কাছে থাকা উচিত।
মুফতি রেজাউল করীম আবরার বাংলাদেশের উদীয়মান একজন ইসলামি স্কলার। প্রচুর মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে ইতিমধ্যে তিনি বাংলাদেশে ফিকহে হানাফির প্রতিনিধিত্বশীল একজন আলেমে পরিণত হয়েছেন। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অনুসরণে ওলামায়ে দেওবন্দের অনুসৃত পথে তিনি বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ইসলাম ও ফিকহর দাওয়াত নিয়ে। মুফতি রেজাউল করীম আবরার সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের তালবাড়ী পূর্ব গ্রামে ১৯৯২ ঈসায়ি সনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমে দ্বীন শায়খুল হাদিস আল্লামা কুতবুদ্দীন রাহ.। তার নানা হলেন শায়খুল ইসলাম আল্লামা হুসাইন আহমদ মাদানী রাহি. এর স্নেহধন্য শায়খুল হাদিস আল্লামা হাফিজ জাওয়াদ হুসাইন পারকুলি রাহি.। তিনি তাকমিল ফিল হাদিস সমাপ্ত করেন ঢাকাস্থ জামেয়া ইকরায়। তাখাসসুস ফি উলুমিল হাদিস পড়েন ঢাকার মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ায় ও তাখাসসুস ফিল ফিকহি ওয়াল ইফতা পড়েন জামেয়া আবু বকরে। লেখাপড়া শেষ করে জামেয়া আবু বকর যাত্রাবাড়িতেই মুফতি এবং সিনিয়র মুহাদ্দিস হিসেবে শুরু হয় তার কর্মজীবন। সেখানে তিনি পাঁচ বছর বুখারী শরীফ সহ হাদীসের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কিতাবাদি পাঠদান করেছেন। শিক্ষকতার জীবনে তিনি একজন সফল শিক্ষক। ছাত্রদের কাছে বিপুল জনপ্রিয় তার দরস। শিক্ষকতার পাশাপাশি মিডিয়াতে রয়েছে তার সরব বিচরণ। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং এফ.এম রেডিওতে তার তাত্ত্বিক আলোচনা বেশ সমাদৃত হচ্ছে। যুগে যুগে ফিকহের ব্যাপারে কিছু মানুষ অপপ্রচার করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ফিকহে হানাফির ব্যাপারে কিছু লোক বিভিন্ন আপত্তি করতে থাকলে তাদের অসারতা প্রমাণে বাংলাদেশে যে কয়েকজন তরুণ আলেম উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলছেন, তিনি তাদের মাঝে অন্যতম। মুনাজারা তথা বিতর্ক শাস্ত্রে তিনি বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি বেশ কিছু মুনাজারায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং হককে সুন্দরভাবে সুপ্রতিষ্ঠিতে করেছেন। ছাত্র থাকাকালীন সময়েই প্রকাশিত হয় তার অনূদিত এবং তাখরিজজকৃত প্রথম গ্রন্থ তারাবীর নামায, একটি তাত্ত্বিক পর্যালোচনা। এরপর ড. শায়খ আলি তানতাবির আলোর মিনার (অনুবাদ), দাজ্জাল: ফিতনা ও পর্যালোচনা (মৌলিক) ছাড়াও বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ হয়েছে এবং বিজ্ঞমহলের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। তার অন্যান্য বইগুলো হলো – বারো মাসের করণীয় ও বর্জনীয়, ইমাম আযম আবু হানিফা রহ., আপনি কীভাবে নামাজ পড়বেন?, ইসলাম ও কুফুরের সংঘাত, কালেমার প্রামাণিকতা, শামায়েল তিরমিযি, আলোর মিনার, কুরআন সুন্নাহর আলোকে বেদআত, জান্নাতে যাওয়ার হাজার পথ, ওরিয়েন্টালিস্ট: স্বরুপ সন্ধান, খতমে নবুওয়াত ও প্রতিশ্রুত মাসীহ। তিনি বর্তমানে জামেয়া মাহমুদিয়া, যাত্রবাড়ি, ঢাকার প্রধান মুফতী এবংজামেয়া ইসলামিয়া, কুতুবখালি, ঢাকার শায়খুল হাদীস হিসেবে ইলমি খেদমতে রয়েছেন। এছাড়াও তিনি জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন । আমরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি।