"শব্দে শব্দে আল কুরআন ১২তম খণ্ড" বইটির কিছু কথা অংশ থেকে নেয়াঃ কুরআন মাজীদ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব। কিয়ামত পর্যন্ত যতাে মানুষের আগমন, পৃথিবীতে ঘটবে সকলের জন্য এ কিতাবের বিধানই অনুসরণীয়। তাই সকল মানুষ যাতে এ কুরআনকে বুঝতে পারে সেজন্য যেসব ভাষার প্রচলন পৃথিবীতে রয়েছে সেসব ভাষায় এ কিতাবের অনুবাদ হওয়া প্রয়ােজন। মহান আল্লাহ কুরআন মাজীদকে মানুষের জন্য সহজবােধ্য করে নাযিল করেছেন। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন: ولقد يسرنا القران للذكر فهل من مكر “আর আমি নিশ্চয় কুরআন মাজীদকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, আছে কি কোনাে উপদেশ গ্রহণকারী?”-সূরা আল কামার : ১৭ সুতরাং কুরআন মাজীদকে গিলাফে বন্দী করে সম্মানের সাথে তাকের উপর না রেখে বরং তাকে গণমানুষের সামনে সম্ভাব্য সকল উপায়ে তুলে ধরে তদনুযায়ী ব্যক্তি, সমাজ ও জাতি গঠন করার মধ্যেই নিহিত রয়েছে মানব জাতির সার্বিক কল্যাণ। এ পর্যন্ত অনেক ভাষায় এর অনুবাদ হয়েছে। বাংলা ভাষায়ও এর বেশ কিছু অনুবাদ রয়েছে। তারপরও আধুনিক শিক্ষিতজনদের চাহিদা ও দাবির প্রতি লক্ষ্য রেখে আধুনিক প্রকাশনী এ মহান উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে গ্রন্থের কলেবর বৃদ্ধির প্রতি লক্ষ্য না করে পাঠকদের জন্য যাতে সহজবােধ্য হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। অনুবাদের ক্ষেত্রে পারিভাষিক পদ্ধতিকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। প্রতিটি লাইনের অনুবাদ সে লাইনেই সীমিত রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে। তাতে পারিভাষিক অনুবাদের বিশেষত্ব কোথাও কোথাও ক্ষুন্ন হয়েছে। অতপর অনূদিত অংশের শব্দে শব্দে অর্থ প্রদান করা হয়েছে। এরপরেই সংক্ষিপ্ত কিছু টীকা সংযােজিত হয়েছে। প্রতিটি রুকূ'র শেষে সংশ্লিষ্ট রুকূ'র শিক্ষণীয় বিষয়গুলাে উল্লেখ করা হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় কুরআন মাজীদের অনেক ব্যাপক বিস্তৃত তাফসীর রয়েছে। এসব তাফসীর গ্রন্থের কিছু কিছু বাংলা ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তবে আমাদের এ সংকলনের পদ্ধতি অনুযায়ী ইতিপূর্বে কেউ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। ওলামায়ে কেরামের জন্য সহায়ক অনেক তাফসীর গ্রন্থ রয়েছে। আমরা আধুনিক শিক্ষিত ও সাধারণ পাঠকদেরকে সামনে রেখেই এ ধরনের অনুবাদ-সংকলন প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। এ ধরনের অনুবাদের মাধ্যমেই তাঁরা বেশী উপকৃত হবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। কুরআন মাজীদকে গণমানুষের জন্য অবাধ-উন্মুক্ত করে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য। কুরআন মাজীদের এ অনুবাদ-সংকলনে নিম্নে উল্লেখিত তাফসীর ও অনুবাদ গ্রন্থসমূহের সাহায্য নেয়া হয়েছে : (১) আল কুরআনুল কারীম ইসলামিক ফাউণ্ডেশন; (২) মাআরেফুল কুরআন ; (৩) তালখীসতাফহীমুল কুরআন ; (৪) তাদাব্বরে কুরআন ; (৫) লুগাতুল কুরআন ; (৬) মিসবাহুল লুগাত।