ফ্লাপে লিখা কথা জাদু টোনার ধেম কামরূপ কামাখ্যা গেলে ফিরে আসা যায় না, নির্ঘাত মৃত্যু নয়তো পশু হয়েই নাকি থাকতে হয়। বহুবার একথা লোকমুখে শুনেছেন লেখক লিয়াকত হোসেন খোকন। তবুও বুকে প্রচন্ড সাহস নিয়ে তিনি কামরূপ কামাখ্যায় গিয়ে ভূত-পেত্নির মুখোমুখি হয়েছেন। পরীদের দেখা না পেলেও জিনের সঙ্গে পরিচয় ও তাদরে পাশে রাত কাটিয়েছেন। নাগা সন্ন্যাসী গোখরো সাপ দেখিয়ে চোখ রাঙিয়ে বলেছে ‘চলে আয় চলে আয়..রাতে শ্মশান ঘাটে দেখা কর..’। কলকিতে টান দিতেই জ্ঞান হারান লেখক। দুদিন আগে মারা যাওয়া এক ব্যক্তিকে সন্ধের পরে শ্মশানঘাটে বসে থাকতে দেখেছেন তিনি। মৃত ব্যক্তি বলেছে- ‘এদিকে আয় . ‘। নির্জন পথে পরিচয় হয় একজনার সঙ্গে, তারপর বন্ধুত্ব। পরক্ষণেই বলল, ‘পায়ের দিকে তাকান, দেখুন তো মানুষ কিনা!’ কামাখ্যায় কারা যেন ভয়-ভীতি দেখায়। ওদের এই দেখা যায়, আবার দেখা নেই। এরকম বেশকিছু রহস্যময় ঘটনা লেখকের জীবনে বাস্তবে দেখা গেছে। এরকমই রহস্যময় কিছু ঘটনার কাহিনী এই পুস্তিকায় তুলে ধরেছেন তিনি।
বইটির মূল সামারীঃ ১৯৭৫ লিয়াকত হোসেন খোকন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়ন কালে তিনি জাদুটোনা বা তন্ত্রমন্ত্রের দেশ কামরূপ কামাখ্যায় পা রাখেন। যদিও লেখকের কামরূপ কামাখ্যা সম্পর্কে ছোটবেলা থেকেই আলাদা একটা কৌতুহল কাজ করছিল যে তিনি সেখানে যাবেন। তার মামা একদিন ছোটবেলায় কামরূপ কামাখ্যার মানচিত্র দেখান, ঐ দেশে গেলে নাকি আর ফিরে আসা যায় না, আসলে বীর হয়ে ফিরে আসে জাদু মন্ত্র শিখে না হলে পশু হয়ে সারাজীবন থাকতে হয়। মা, নানাজানের কাছ থেকে ঐ দেশ সম্পর্কে জানার পরে তিনি আরো বেশী আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। অবশেষে সেখানে যাওয়ার পরে তিনি ভাগ্রক্রমে ফিরে আসেন। সেখানে তিনি চোখের সামনে থেকে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া কিছু বিষয় দেখতে পান। কামরূপ কামাখ্যায় অনেক বড় বড় মন্দির, বিভিন্ন ধরনের সন্যাসী দেখতে পান। ঐদেশ সম্পর্কে ভ্রমনের বিষয়গুলো লেখক সুন্দর ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
Liakot Hosan Khokon লেখক লিয়াকত হােসেন খোকন ১৯৫৩ সালের ১৪ মার্চ পিরোজপুর শহরের রায় বাহাদুর রোডে (আদর্শপাড়া) ‘স্মৃতি ভবনে’ জন্মগ্রহণ করেন । পিতা মৃত আমির হােসেন মিয়া এবং মাতা মৃত্যু আমেনা খাতুন | লেখক ১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভের পর প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার ইতি টানেন । ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত, সহধর্মিণী শওকত আরা ডলি । অলি শাহরিয়ার হাসান ও লিয়াকত হােসেন খোকন । ১৯৯৬ সালে তার লেখা বাংলাদেশ ভ্ৰমণ পুস্তিকাটি প্রকাশিত হয় হাক্কানি পাবলিশার্স থেকে । তার দ্বিতীয় গ্ৰন্থ ৬৪ জেলা ভ্ৰমণ অনিন্দ্য প্রকাশ থেকে বের হয়। ২০০৭ সালে । ২০০৮ সালে প্রকাশ হয় তাঁর তৃতীয় গ্রন্থ ভারত নেপাল ভূটান ভ্ৰমণ । ১৯৭৩ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের প্রতিটি প্রদেশ তিনি ঘুরে দেখেছেন । ১৯৭৫ সালে জাদুটোনার দেশ কামরূপ কামাখ্যায় প্রথম যান, তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র । তারপর ২০০৮ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এ নিয়ে মোট সাতবার কামরূপ কামাখ্যায় তিনি গিয়েছেন । জাদুকর, ভূতপেত্রিদের খপ্পরে পড়েও তিনি ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছেন । সেই অভিজ্ঞতার আলোকে লেখক লিয়াকত হােসেন খোকনের এবারের আয়োজন জাদু টােনার দেশ কামরূপ কামাখ্যা পুস্তিকাটি ।