ফ্ল্যাপে লিখা কথা বাংলা কবিতার হাজার বছরের ইতিহাস মূলত পালা বদলেরই ইতিহাস। সেইযে সুদূর চর্যাপদ থেকে মধ্যযুগের পদাবলী কিংবা অষ।টাদশ ও উনিশ শতকের বাক্যভাষা বিবর্তনে কবিতার যে নতুন ইতিহাস , আধুনিকাতার যে সূচনা, তা আসলে কবিতার রুপ পরিবর্তনেরই ইতিহাস। মধুসূদন, বিহারীলাল,রবীন্দ্রনাথ, নজরুল হয়ে হয়ে তিরিশি আধুনিকতা বা জীবনানন্দের আধুনিকতা পর্যন্ত কিংবা অতি সাম্প্রতি আধুনিকতা কবিতা পর্যন্ত ধাপে ধাপে যে রূপান্তর ঘটেছে, তা কিন্তু হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা নয়। কবিতার বাঁক বদল ঘটে চলেছে সেই সুদূর অতীত থেকেই। একজন মানুষের চেহারা যেমন আর একজন মানুষের হুবহু নয়। একজন কবির কবিতা কিংবা একটি বিশেষ কালের কবিতাও অন্য বিশেষ কালের কবিতার হুবহু নয় । এখানই মানুষ থেকে মানুষ কবিতা থেকে কবিতার স্বাতন্ত্র্য। এই স্বতন্ত্রের সাধনাই প্রকৃত কবির সাধনা।স্বাধীন বাংলাদেশের গত তিন যুগের কবিতাতেও বহু পরিবর্তনের ডেউ লেগেছে। গত শতাব্দীর পঞাশ -ষাট, সত্তর ও আশির দশকের কবিতাও স্বভাব চরিত্র্যের অবশ্যই আলাদা। এই আলাদা বা স্বাতন্ত্রের ধারায় নব্বইয়ের কবিতাও বিশেষ কিছু প্রবণতা এবং বৈশিষ্ট্য পূর্ববর্তী কবিদের কবিতা থেকে পৃথক এবং সহজ সনাক্ত করার মতো কিছু বৈশিষ্ট্য ধরে আছে। সেই বৈশিষ্ট্যমন্ডিত কবিতা নিয়েই নব্বইয়ের দশকের কবিদের এই নির্বাচিত কবিতা সংকলন।বাংলা ভাষার কবিতাকে যথার্য় ও পরি পূর্ণ গুরুত্ব দিতে গিয়েই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা রাজ্যের নব্বইয়ের কবিদের কবিতাও বাংলাদেশর কবিদের সমান গুরুত্বেই সযত্নে উপস্থাপন করা হলো। ৮০ জন কবির ৪০ জন বাংলাদেশের এবং ৪০ জন ভারতের । আশা করা যায় , কবিতারক্রম বিবর্তনের প্রতি সচেতন ও আগ্রহী পাঠক এ সংকলনে নতুন কিছু পাবেন। ভেতরে ভেতরে যে গত এক দশকে বাংলা কবিতার একটি নি:শব্দ ভাঙচুর হয়ে গেছে , তার সন্ধান পাবেন প্রন্থিত কবিতাগুচ্ছ একসঙ্গে পড়তে বসে। বাংলা ভাষার কবিতা হলেও্ যে দুেই দেশের কবিতার কিছু মৌল চেতনাগত পার্থক্য আছে, তাও প্রতিলিত এ সংকলনের কবিতাগুচ্ছে। আশা করা যায়, কবিতা গবেষকদেরও চাহিদা মেটাতে পারবে এ সংকলন। সূচিপত্র সম্পাদকের কথা