"অমিতাভ বচ্চন" বইটিতে লেখা ফ্ল্যাপের কথা: বছরকয়েক আগে কাগজে একটি বিজ্ঞাপন বেরিয়েছিল। বিজ্ঞাপনটি একটি ফিল্ম ম্যাগাজিনের। প্রকাশনার জগতে সেই ম্যাগাজিনটির আবির্ভাবের আগাম বার্তা ঘোষণাই ছিল বিজ্ঞাপনটির উদ্দেশ্য। তাতে একটি বাক্য ছিল যার বাংলা। তর্জমা : বড় হয়ে আমি অমিতাভ বচ্চন হতে চাই। খুব স্পষ্ট এবং সরল বাক্য মানেটা আরও স্বচ্ছ আমি সফল হতে চাই এবং সেই সাফল্য কার মতো না? অমিতাভ বচ্চন। এই সাফল্য, যার দিকে লোকে জুলজুল করে তাকিয়ে থাকে ও যা পাওয়ার জন্যে লোকে স্বপ্ন দেখে, কী করে অর্জিত হয় ? কিংবা অন্যভাবে বলা যায়, এত লোক তো অভিনয় করেন, কেন একজন অমিতাভ বচ্চন হন ? ভালর সঙ্গে আরও ভাল, আরও ভালর সঙ্গে সবোত্তমের পার্থক্য কেন ও কীভাবে গড়ে ওঠে এবং এই গড়ে ওঠার পথে কোন্ কোন্ শক্তি ও সমন্বয় কাজ করে ? একটা মজবুত পারিবারিক বন্ধন কেমনভাবে ও কতটা গাইড করে কিংবা আদৌ করে কি না! মোদ্দা কথায়, অমিতাভ বচ্চনদের রসায়নটা কেমন হয়। সেই জিজ্ঞাসা হয়ত আজকের নয়, অনন্তকালের। সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় এই বইয়ের পাতায় পাতায় সেটাই খুঁজে বেরিয়েছেন। দেখেছেন, কীভাবে একটি অতি সাধারণ চেহারার মানুষ ধীরে ধীরে একটা গোটা প্রজন্মের প্রতীক হয়ে দাঁড়াচ্ছেন, দাপটের সঙ্গে বিনোদনের জগতের শাসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, অথচ আগাগোড়া ফিল্মের লোক হয়েও নিজেকে ফিল্ম জগতের আর-পাঁচজনের থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে নিজের চারধারে একটা হেঁয়ালির সৃষ্টি করে রেখেছেন। বুঝেছেন, অমিতাভ বচ্চন সেই প্রহেলিকা, যাকে ধরার চেষ্টাটাই খুব কঠিন; তিনি সেই হ্যালির ধূমকেতু, যা এক শতকে একবারই দেখা যায়। সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্লেষণী কলম ও অনুসন্ধানী দৃষ্টি বলিউডের মুকুটহীন সম্রাটকে এই বইতে নতুনভাবে চেনাবে এমন এক জরুরি কাজ তিনি করলেন, যে-কাজে এ-যাবৎকাল কেউ সেভাবে হাত দেয়নি। অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ধার করেছেন তিনি, নিয়েছেন অসংখ্য সাক্ষাৎকার, জোগাড় করেছেন দুর্লভ বহু আলোকচিত্র। সব মিলিয়ে, অবশ্যসংগ্রহযোগ্য হয়ে উঠেছে এই বই।