“তবলা তত্ত্ব" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ সংগীতের সাথে তবলা প্রধানতম আনদ্ধ অনুষঙ্গ একটি বাদ্যযন্ত্র। চামড়ার আচ্ছাদন দিয়ে তৈরি বলে একে আনদ্ধ বা অবনদ্ধ বাদ্যযন্ত্র বলা হয়। তবলা নিজস্ব বৈশিষ্ট মন্ডিত স্বয়ং সিদ্ধ একটি বাদ্যযন্ত্র। অর্থাৎ এ বাদ্য শুধু মাত্র গায়ক বা বাদককে সহযােগিতাই করেনা বরং একক বাদন রূপে ও বহুল সমাদৃত ও প্রতিষ্ঠিত একজন গুণী তবলা শিল্পী তাঁর সঙ্গতের গুণে একটি গান বা বাদনকে মাধুর্যময় করে তুলতে পারেন। প্রত্যেক শিল্পীরই সেই শিল্পে তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক এই দুই বিষয়কে সমান গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। কিন্তু খেয়াল করলে দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক দিকে তৎপর থাকলেও তত্ত্বীয় বিষয়ে তেমন আগ্রহ রাখেনা। ফলে এর প্রকৃত রস আস্বাদন কঠিন হয়ে পড়ে। স্বাধীনতা উত্তর পূর্বকালে এ অঞ্চলে অনেক গুণী তবলা শিল্পীর জন্ম হলেও ব্যতিক্রম স্বল্পসংখ্যক। ছাড়া তাদের কর্মকাণ্ড ও দক্ষতা ব্যবহারিকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছে। দীর্ঘ ব্যবধানে এ কর্মে ব্রতী হয়েছে তপন রায়। তপন পড়য়াও বােদ্ধা শিল্পী। ঢাকায় তার বেড়ে ওঠা, গড়ে ওঠা সবটা আমার সামনেই হয়েছে। তার লেখা গল্প গ্রন্থ, সংগীত সম্পর্কিত লেখা লেখি আমি দেখেছি। নজরুল সঙ্গীতের স্বরলিপি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমি এবং অন্য স্বরলিপিকাররা সময় সময় তার সাথে মত বিনিময় করে থাকি। সে গান লেখে সুর করে স্বরলিপি করে। দীর্ঘ দিন ধরে সে দেশের বিভিন্ন সংগীত বিদ্যায়তনের সাথে জড়িত। প্রথিতযশা সব শিল্পীদের সাথে সঙ্গত করেছে। দীর্ঘ সময়ের শিক্ষা চর্চা, অভিজ্ঞতার প্রতিফলন তার প্রণীত তবলা তত্ত্ব’ গ্রন্থে।