জীবনের ওপর নেমে আসা কুয়াশার অন্ধকার মানব যাত্রার গতিকে সাময়িক রোধ করলেও সময়ান্তরে তার অবসান ঘটবেই। অন্ধকারের শেষে আলো আসবে। রুদ্ধ পথ মুক্ত হবে। মানবিক জীবনের নতুন উত্তরণের কথাই মানব সমাজের চিরন্তন ইতিহাস। ‘...কেয়ই ভালো নাই। আইজ আর কাইল হগলেই চইলা যাইবো। আমি দুর্বল মানুষ, আমারে সাহায্য করণের কেউই আছিল না। তাই জুলুমটা পরথম আমার উপুর আইছে। আমার জমিজমার উপুর লোভ থিকাই এই জুলুম। একদিন যখন এই জুলমের রাজ কায়েম হইয়া যাইব, তখন সগলের উপুর তা হইব। তারপর যখন আর হিন্দুরা থাকব না, এই জুলুম হইব দুব্বল মোছলমান যারা, তাগো উপুর।...’ লেখক কমলেন্দু ভট্টাচার্য বর্তমান বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলার ধানুকা গ্রামে জন্ম। পিতা স্বনামখ্যাত প-িত রোহিনীকান্ত সাঙ্খ্যতীর্থ-লেখক হর্ষবর্ধনের সভাপতি ময়ূর ভট্টের উত্তরপুরুষ। সংস্কৃত সাহিত্যের প্রথিতযশা কবি বৈজয়ন্তী, লেখকেরই উর্ধ্বতন পুরুষের কন্যা। দেশভাগ ও তৎপরবর্তী উত্তাল সময়ে ওপারে চলে যাওয়া। পরবর্তী সময়ে এক ছিন্নমূল উদ্বাস্তুর অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। প্রাণান্তকর জীবনসংগ্রামের মধ্যেও হারিয়ে যায়নি শৈশব-কৈশোর থেকে গড়ে ওঠা লেখকের সাহিত্যানুরাগ। প্রচারবিমুখ লেখকের লেখা প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন দৈনিক ও মাসিক পত্রিকায় ‘বসুমতী’, ‘কিশোরভারতী’ ও অন্যান্য পত্রিকায়। বর্তমান উপন্যাসও লেখকের কৈশোর-যৌবন থেকে লালন করে রাখা অভিজ্ঞতারই ফসল।