মহান বীর সুলতান মানসুর কালাউন সম্পর্কে ইতিহাসে নির্ভরযোগ্য সূত্রে তেমন কোনো আলোচনা পাওয়া যায় না। বিশেষত বাংলা ভাষায় তো নেইই। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি মামলুক সাম্রাজ্যের মহান সুলতান কালাউনের বর্ণিল জীবনালেখ্য নিয়ে রচিত। সুলতান কালাউন এমন শাসক ছিলেন, যিনি মিসর ও প্রাচ্যে মানবসভ্যতা পুনর্নির্মাণের বীজ বপনে এককভাবে দাঁড়িয়েছিলেন। মূলত সুলতান বাইবার্সের রাজনৈতিক রীতিনীতির ওপরই ছিল তাঁর পথচলা। মোঙ্গল ও ক্রুসেডারদের আক্রমণ রুখে দিয়ে আরববিশ্বকে তাদের অনিষ্ট থেকে মুক্তি দেন। তিনি সম্রাট রোডলফ হাপসাবার্গসহ ইউরোপীয় অন্যান্য শাসকের সঙ্গে সন্ধিচুক্তি করেন। সুলতান বাইবার্স সভ্যতা বিনির্মাণের যে সূচনা করেছিলেন, কালাউন সেটার ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন। গ্রন্থটি পাঠ করলে আমরা জানতে পারব সুলতান কালাউন কীভাবে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। হাজার বছর পরেও টিকে থাকা মানসুরিয়া হাসপাতাল তৈরিতে তিনি কীভাবে এগিয়ে এসেছিলেন। মসজিদ-মাদরাসাসমূহ সংরক্ষণে তাঁর অবিস্মরণীয় সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ—শুধু আপন রাষ্ট্রেই নয়; বরং এর বাইরে মসজিদে নববি পর্যন্ত যেটা বিস্তৃত ছিল। সুলতান কালাউন যখন ইনতিকাল করেন, তখন শতবর্ষ নেতৃত্বদানকারী একটি পরিবার রেখে যান, যাঁর বংশধররা শত বছর পর্যন্ত তাঁর যোগ্য উত্তরাধিকার ধরে রাখতে সক্ষম হয়। এ জন্য তাঁকে ‘আবুল মুলুক’ বা ‘বাদশাহদের পিতা’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।