ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের ইতিহাস ও দর্শনের বিভিন্ন দিক নিয়ে সবিস্তর আলোচনা-ই তাওহিদ ও বিজ্ঞান গ্রন্থটির মূল উপজিব্য। এছাড়া এ গ্রন্থে আধ্যাত্মিক ও উপলব্ধিগত বিজ্ঞানসহ গাণিতিক ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের সেই সামগ্রিকতাকে তুলে ধরা হয়েছে যা ইসলামী সংস্কৃতি ও সভ্যতায় ইসলামের তৃতীয় শতকের (নবম খ্রিষ্টাব্দ) শুরু থেকে এক সহস্রাব্দেরও অধিককাল ধরে চর্চা করা হয়েছে। বিশেষত চিকিৎসাবিজ্ঞান, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, রসায়নশাস্ত্র, গণিত (জ্যামিতি, বীজগনিতসহ), জ্যোতির্বিজ্ঞানসহ বিজ্ঞানের সকল শাখায় মুসলমানদের বিস্ময়কর অগ্রগতি কীভাবে অবদান রেখেছিল এবং বিশ্বকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল তা সংক্ষিপ্তাকারে অথচ নিখুঁতভাবে তুলে আনা হয়েছে। একইসাথে আল্লাহর একত্ববাদ তথা আল-তাওহিদ এবং বিজ্ঞানের মধ্যে বিরাজমান মৌলিক কাঠামোগত সংযোগ এবং সামঞ্জস্যতার বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে গ্রন্থখানিতে। তাছাড়া সমসাময়িক বিশ্বের কোথায় কোথায় ও কীভাবে ইসলামী জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা ও প্রসার হয়েছে তারও আলোচনা রয়েছে অত্র গ্রন্থে। গ্রন্থখানিতে শুধু গতানুগতিকভাবে মুসলমানদের উত্থান-পতনের কাহিনীই বিবৃত হয়নি, বরং কীভাবে মুসলমানরা বিদ্যমান সকল সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে আজকের অভাবনীয় প্রযুক্তিগত উন্নতি আর সুকঠিন প্রতিযোগিতার এই যুগে আবারও জ্ঞান-বিজ্ঞানে তাদের হৃত গৌরব ও নেতৃত্ব ফিরে পেতে পারে তারও বিষয়ভিত্তিক সিলেবাস ও কারিকুলাম সহ সুনির্দিষ্ট পথ ও পন্থা বাতলে দেয়া হয়েছে। গ্রন্থখানির প্রতিপাদ্য বিষয়সমূহকে তুলে ধরতে ও প্রতিষ্ঠিত করতে বেশ কয়েকজন মুসলিম ধর্মতাত্ত্বিক, বিজ্ঞানী ও দার্শনিকের দর্শন, চিন্তাভাবনা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে তাদের অবদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন: আল-গাজ্জালী, আল-আশআরী, ইবনে সিনা, ওমর খৈয়াম প্রমুখ। এ ছাড়াও, আজকের যুগের মুসলিম গবেষক হিসেবে লেখকের ওস্তাদ/অগ্রজ সাইয়্যেদ হোসাইন নাস্র-এর গবেষণার উদ্ধৃতি ছড়িয়ে আছে গ্রন্থখানি জুড়ে।