সাহিত্য' শব্দটির উৎপত্তি সহিত’ শব্দ হতে। সাহিত্য বলতে আমরা বুঝি সঙ্গ, সংসর্গ, সাহচর্য বা মিলনকে। মানুষের ব্যক্তিগত ও জাতীয় চিন্তা লিখিত ভাষায় প্রকাশিত হলে সাহিত্য বলে গণ্য হয়ে ওঠে। মানুষ তার মনের ভাবকে প্রকাশ করতে বা অন্যর মধ্যে সঞ্চার করতে সাহিত্যের আশ্রয় গ্রহণ করে। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মন, মনন, মেধার যথাযথ প্রয়ােগের মাধ্যমে মনের সহজাত প্রবৃত্তি। তার আবেগ, অনুভূতি, ধারণা, অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস ইত্যাদি প্রকাশ করতে সদাশর্বদা উদগ্রীব। অন্যদিকে মানুষের চাহিদা সীমাহীন ও প্রাপ্তি নিতান্তই সীমিত। অন্যান্য জীবের মতাে মানুষের ক্ষুধা শুধুমাত্র দৈহিকে সীমাবদ্ধ নয়। মানুষ কল্পনাপ্রবণ জীব বলে শুধু দৈহিক ক্ষুধা নিবৃত্ত করলে চলে না। তাকে নিবৃত্ত করতে হয় মানসিক ক্ষুধাও। মানুষের একই সাথে দৈহিক বা জৈবিক ক্ষুধা নিবৃত্তির পাশাপাশি আত্মিক বা মানসিক ক্ষুধা নিবৃত্তির প্রয়ােজন দেখা দেয়। সীমিত প্রাপ্তির কারণে পরিপূর্ণরূপে ক্ষুধা বা চাহিদা নিবৃত্তি অসম্ভব হয়ে পড়লে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই কল্পনার আশ্রয় গ্রহণ করে। মানুষের জীবনের সুখ-দুঃখ আকুলতা আর্তি সংবলিত মানসিক অভাব নিবৃত্তির শৈল্পিক প্রকাশকে সাহিত্য' বলা যেতে পারে।প্রত্যেক মানুষের মাঝে কল্পনাশক্তি বিদ্যমান। কিন্তু প্রত্যেকের পক্ষে তা সুষ্ঠু, যথাযথ ও রসমণ্ডিতভাবে প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। কারণ সবার পক্ষে কল্পনার, ভাবের, বিষয়ের ও ভাষার সমন্বিত রূপ প্রকাশ সম্ভব হয় না। যারা সেই গুণের অধিকারী তাদের দ্বারাই সম্ভব হয় সাহিত্য সৃষ্টি।