‘আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ইসলাম’ বইয়ের বিস্তারিত সূচিঃপ্রস্তাবনাঃ ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী বর্তমান পৃথিবীর অবস্থা, পরষ্পরের নৈকট্য, বিজ্ঞানের প্রভাব, ধর্মীয় ঐতিহ্যের বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা। প্রথম অধ্যায়ঃ ইসলাম ও তার অবদান ইসলামের অর্থ, আনুগত্যের স্বরূপ, হজরত ইব্রাহিমের সমাজ ব্যবস্থা, মানুষ নবী, জীবনমুখী ধর্ম, স্রষ্টা ও সৃষ্টির সম্পর্ক, বিশ্বাস ও সৎকর্ম, নির্দেশের দায়িত্ব, সাধারণতন্ত্র, দায়িত্বের জন্য জ্ঞানার্জন, জ্ঞানের গুরুত্ব ও ব্যাপকতা। দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ ইসলাম ও মুসলমান উভয়ের পার্থক্য, পৃথক নেতৃত্বের প্রস্তাব, জাকাত অস্বীকার ও মিথ্যা নবুয়তের হাঙ্গামা, কোরাণ সংকলন, লুন্ঠিত সম্পদের প্রতিক্রিয়া, হজরত উমরের শাহাদাত, কোরাণের কোরায়শী সংস্করণ, হজরত উসমানের শাহাদাত, সাহাবীদের দ্বিধাবিভক্তি, হজরত আলীর শাহাদাত, কারবালার ঘটনা, সামন্তবাদের প্রতিষ্ঠা, উমাইয়া ও আব্বাসী আমল, ভক্তিবাদের অনুপ্রবেশ, সামন্তবাদী প্রভাবের ফলশ্রুতি। তৃতীয় অধ্যায়ঃ ইসলাম ও অন্যান্য ধর্ম সেমেটিক ঐতিহ্য, ইহুদী ও খৃষ্টানের প্রভাব, হাদীস সংকলন, খৃষ্ট ধর্মের অনুকরণ, ইরানী প্রভাব, শিয়া ও ভক্তিবাদ, ভারতবর্ষে ভক্তিবাদ, পীর ও কবর পূজা, পবিত্র দিন রাত্রি, দোয়া দুরুদ তাবিজ কবজ, ইকবালের মন্তব্য। চতুর্থ অধ্যায়ঃ ইসলাম ও দর্শণ-বিজ্ঞান ইসলামের সাম্য, দার্শনিক পটভূমি, কোরাণ দর্শণ-বিজ্ঞান বা সাহিত্যের গ্রন্থ নয়, দর্শণ বিজ্ঞানের প্রশ্ন ও উত্তর, উপদেশের গ্রন্থ, গ্রীক ঐতিহ্যের প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া, দর্শণ-বিজ্ঞানের প্রতি অনীহার কারণ, ইসলামী ঐতিহ্য উদ্ধারে দর্শণ-বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা, আল্লা ও সেমেটিক পুরাণ, কোরাণের আশাবাদ। পঞ্চম অধ্যায়ঃ ইসলাম ও শিল্পকলা সংস্কৃতি ও শিল্পকলা, কাব্য সম্পর্কে কোরাণ, সঙ্গীত, চিত্র ও ভাস্কর্য, ইসলামী দৃষ্টিকোণ, সামন্তবাদী ঐতিহ্য, ফতেহপুর সিক্রি, স্থাপত্যে মুসলমান, আলোকচিত্র, সমস্যা ও সমাধান, প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি, মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য প্রসঙ্গ, মাতৃ সম্বোধন, আত্মবিশ্বাসের অভাব। ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ ইসলাম ও অর্থনীতি আধুনিক অর্থনীতি, বেদুইন অর্থনীতির সারল্য, হৃত সম্পদ পুনরুদ্ধার, ভিক্ষাবৃত্তি, বায়তুল মাল, আবু জর গিফারি, ব্যক্তিগত সম্পত্তি, সুদ ও জুয়া, মজুতদারী ও ঘুষ, শোষণ ও প্রতারণা মুক্তির লক্ষ্য, বর্তমান অর্থনীতি, ব্যাংকিং প্রথা, মজুরের স্বার্থ, এদেশের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ। সপ্তম অধ্যায়ঃ ইসলাম ও মানবতাবাদ ইসলামী মানবতাবাদ, আধুনিক মানবতাবাদ, দাসদাসীর মুক্তি ঘোষণা, নারীর মর্যাদা, পর্দা প্রথা, বহু বিবাহ ও তালাক, পর ধর্মের প্রতি কটূক্তি, ধর্মীয় জবরদস্তি, সাম্প্রদায়িকতা, সামন্তবাদী আচরণ, ইউরোপীয় রেনেসা, বিপন্ন মানবতাবাদ, পুঁজিবাদের মানবপ্রেম, প্রাচুর্যের আগুণ। অষ্টম অধ্যায়ঃ ইসলাম ও রাজনীতি রাজনীতির অর্থ, ইসলামের রাজনীতি, রাজনীতি ও ধর্ম, জামাত-কাদিয়ানী দাঙ্গা, বাটপাড়ির রাজনীতি, বাহ্মসমাজ, আহমদিয়া মিল্লাত, সর্বহারার রাজনীতি, শ্রেণী চরিত্র বিশ্লেষণ, ইসলামী বিপ্লব ও পঞ্চস্তম্ভ, আন্দোলনের গতিপথ, শোষিতের ঐক্য, সংগ্রামের চাবিকাঠি। নবম অধ্যায়ঃ ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ জাতীয়তাবাদের মূল লক্ষ্য, আরবী জাতীয়তাবাদ, মুসলিম জাতীয়তাবাদের সম্ভাবনার লোপ, ইদানিং সে ব্যাপারে উদ্যোগ ও ব্যার্থতা, এদেশে ব্যার্থ হবার কারণ, ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ ও ব্যার্থতা, বিভিন্ন দেশের নিজস্ব জাতীয়তাবাদ, সামন্তবাদ ও পুঁজিবাদের ভূমিকা, মুসলমানদের করণীয়। দশম অধ্যায়ঃ ইসলাম ও গণতন্ত্র মানুষের কথা, আধুনিক গণতন্ত্র, ইসলামী সাধারণতন্ত্র, আল্লার নির্দেশ, প্রগতিশীলতার তাৎপর্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা, ধর্ম নিরপেক্ষ গণতন্ত্রের স্বরূপ, বেদুইনের ঘটনা, ইসলাম প্রচারের ঘটনা, মুসলমানদের চরিত্র, উন্নত দেশের গণতন্ত্র, গণতন্ত্র সম্পর্কে ইকবাল, নজরুল ও রবীন্দ্রনাথের সতর্কবাণী। একাদশ অধ্যায়ঃ ইসলাম ও সামন্তবাদ ইসলামের ইতিহাস, সমকালীন সামন্তবাদ, এর বিরোধিতা, ঐক্যের অভাব, সামন্তবাদের অভ্যুদয়, সামন্তবাদের অবক্ষয়, আরবীয় সামন্তবাদের গুণগ্রাহীতা, ভারতীয় মুসলমান সামন্ত, সামন্ত ঐতিহ্য লালনে বিভ্রান্তি, মুসলমানদের সামন্তপ্রীতি, জুম্মার খোতবা, ইসলামী প্রকাশনা, পাঠাগার প্রচেষ্টা। দ্বাদশ অধ্যায়ঃ ইসলাম ও পুঁজিবাদ বিদায় হজ্জের বাণী, সুদ প্রসঙ্গ, পুঁজিবাদের সাথে সাদৃশ্য, ব্যক্তিগত সম্পত্তির স্বরূপ, শোষকদের ধর্মপ্রীতি, পুঁজিবাদের অপসংস্কৃতি, ইসলামের নামে প্রতারণা, ইকাবালের বক্তব্য, শোষণের আশপাশ, এদেশের পুঁজিবাদী দুরাশা, পুঁজিবাদের মৃত্যুবান। ত্রয়োদশ অধ্যায়ঃ ইসলাম ও সমাজতন্ত্র সমাজতন্ত্রের স্বরূপ, আলোচনায় উল্লেখের স্বল্পতা, বর্তমান অবস্থা, ইসলামের সাথে পার্থক্য, ব্যক্তিগত সম্পত্তির ব্যাখ্যা, শোষণ ও প্রতারণা মুক্তির সাযুজ্য, সামজতন্ত্রে নাস্তিকতা, দান্দ্বিক বস্তুবাদ, আল্লার বিরোধিতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, কুঠার প্রসঙ্গ, নিরপেক্ষতার স্বরূপ, প্রয়োজনীয় দৃষ্টিভঙ্গি, ফিৎরতের ধর্ম, ইসলামের সাথে বন্ধুত্ব। চতুর্দশ অধ্যায়ঃ ইসলাম ও আন্তর্জাতিক পেক্ষাপট আন্তর্জাতিক অনুভূতি, ইসলামী বিশ্বাস, ব্যক্তি অনূভুতির বিশ্বমানদন্ড, পৃথিবীর দুর্দশা, মুসলিম দেশগুলির ভূমিকা, পুঁজিবাদের প্রভাব, ইসলামের উজ্জীবন প্রচেষ্টা, আল্লার বিধান, আমাদের কর্তব্য, প্রগতির কাফেলা। পঞ্চদশ অধ্যায়ঃ ইসলাম ও বাংলাদেশ মাতৃভুমি, ইসলামের অনুপ্রবেশ, উদার পরিবেশ, সাম্প্রদায়িকতা, পাকিস্তান সম্পর্কে ধারণা, বিশ্বের কটূক্তি, ইসলাম পন্থীদের কর্তব্য, ইসলামী দল, তবলিগী জামাত, বন্ধু ও শত্রুর পরিচয়, আমাদের কর্তব্য। উপসংহারঃ শেষ হয়ে আসছে আলোচনা বিদায় নেবার পালা, ইসলামী আদর্শ, উজ্জীবনের পথে অন্তরায়, পরিবর্তনের অনিবার্যতা, আমাদের দুরবস্থা, ভবিষ্যৎ ফলশ্রুতি।
তিনি ১৯২৯ সালের এই দিনে বর্তমান নেত্রকোনার কেন্দুয়ার কাউরাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫২ সালে ঢাকা আলিয়া মাদরাসা থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থানে এমএ (কামিল) পাস করেন। এরপর তিনি বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে ১৯৫৯ সালে বাংলায় অনার্স ও ১৯৬০ সালে এমএ পাস করেন। সামদানী প্রথমদিকে ইমামতি ও মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। এরপর তিনি ড. মু. শহীদুল্লার সম্পাদনা সহকারী, পূর্ব পাকিস্তানের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান প্রকল্প ও পাণ্ডুলিপি ও সংকলন বিভাগ, বাংলা একাডেমিতে (১৯৬১-৬৮) কাজ করেন। বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে (১৯৬৮-৯১) নিযুক্ত হন। সামদানী কোরায়শী অসংখ্য রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বঙ্গবন্ধু পরিষদ, ময়মনসিংহ সাহিত্য পরিষদ, বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাব, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, মাদরাসায়ে আলিয়া, বাংলা সমিতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। তিনি এসব সংগঠনের বিভিন্ন দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য ও বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য ছিলেন। গোলাম সামদানীর মৌলিক রচনার পাশাপাশি অনুবাদ ও সম্পাদনার পরিমাণও বিশাল। তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হতো সাপ্তাহিক ময়মনসিংহ বার্তা। এ ছাড়া বিভিন্ন পত্রিকা ও সাময়িকীদের তার লেখা প্রকাশ হয়। তিনি ৬টি জীবনী ও আত্মজীবিনী, ৫টি উপন্যাস, ৩৬টিরও বেশি গল্প ও গল্প সংকলন, ১০টি নাটক, ৫টি কবিতা সংকলন ও কবিতা, ৪০টি ছড়ার সংকলন, ৬৫টি গানের সংকলন, ২১টি অনুবাদ ও অনেক সম্পাদনা করেন। গোলাম সামদানী কোরায়শী অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। তিনি ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’-২০১৭ লাভ করেন। ১৯৯১ সালের ১১ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।