“ইতিহাসের পূনরাবৃত্তি হবে কি” -বইয়ের কিছু কথা একজন মুসলিম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আল্লাহর নীতি সম্পর্কে অবগত হয়, তখন এটা তাকে প্রচুর অভিজ্ঞতা-সমৃদ্ধ করে দেয়, যে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য তার ক্ষুদ্র জীবনের স্থিতিগুলো যথেষ্ট নয়। যে সময়টা সম্পর্কে আমরা লিখতে যাচ্ছি, তা হচ্ছে হিজরী চতুর্থ শতাব্দী এবং তৎপরবর্তী কালের চিত্র। তখন থেকে সালাহউদ্দীন আইয়ুবীর আবির্ভাব কাল পর্যন্ত পরিবর্তন কীভাবে সূচিত হয়েছে? সে পরিবর্তনের শুরু কোথা থেকে এবং কীভাবে হয়েছে? কোন রকম ভূমিকা আর পূর্বাভাস ছাড়া হঠাৎ করে নূরুদ্দীন জঙ্গি আর সালাহউদ্দীন আইয়ুবীর মতো মহানায়কের আবির্ভাব ঘটে না। সেকালে যা কিছু ঘটেছে এবং তৎপরবর্তীকালে যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছে, তার সঙ্গে কোন কোন দিক থেকে বর্তমান যুগের মিল রয়েছে। আমরা দেখতে পাবো, কীভাবে জাগরণের সূচনা হয়েছে। আবার কীভাবে ক্ষণকাল তা দমিত হয়ে পুনরায় শক্তিশালী রূপে তা প্রকাশ পেয়েছে। এটা স্বাভাবিক যে, সময়টা ছিল ধারণা-কল্পনার চেয়েও বেশি দীর্ঘ। কারণ রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক যে বিধান পূর্ব থেকে চলে আসছিল, তা এতই গভীরে প্রোথিত ছিল যে, তা দূর করার জন্য প্রচ- আঘাতের প্রয়োজন ছিল, প্রয়োজন ছিল অনেক পানি সিঞ্চনের। এরপরও তা সম্পূর্ণ দূরীভূত হয়নি। এবং দু’জন ন্যায় পরায়ণ শাসকের পরও তা অব্যাহত থাকে। কিন্তু তাই বলে সংস্কার আর নবায়নের আন্দোলন বন্ধ হয়নি। আন্দোলন হয়েছে আলেম সমাজের পক্ষ থেকে এবং শাসক শ্রেণির পক্ষ থেকেও। আধুনিক যুগেও জাগরণের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে; কিন্তু তা অতি ধীর গতিতে। তাকে বহন করছে অতীত কালের বোঝা আর গ্লানি। আশা করা যায় যে, আল্লাহর হুকুমে তা কাক্সিক্ষত পরিবর্তন আর ঈপ্সিত সংস্কারের দিকে নিয়ে যাবে। আল্লাহর জন্য এটা কোন কঠিন কাজ নয়। আল্লাহ ই তাওফীকের মালিক।