ফ্ল্যাপে লেখা কথা কৃষ্ণ আফ্রিকার পূর্বাঞ্চল যেখানে গ্রেট রিফট ভ্যালীর ভূতাত্বিক বৈচিত্র, পাথরে সংরক্ষিত ফসিল, অগনন পশু আর পাখীর স্বচ্ছন্দ বিহার, ট্রাইবের বর্ণাঢ্য জীবন অপার কৌতূহলের বিষয় হয়ে রয়েছে তার ওপর এই বই যা মানুষের বিবর্তনের জটিল প্রক্রিয়ার মুখোমুখি করে পাঠককে। আদি মানুষের ফসিল আবিষ্কারের কাহিনি নিয়ে লেখা হয়েছে অনবদ্য এক ভ্রমণকাহিনি যেখানে সুদূর অতীত আর বর্তমানের মিলন ঘটেছে নিবিড় অনুসন্ধিৎসায়, মননশীল বিশ্লেষণে আর সাবলীল প্রকাশভঙ্গীতে। সেই সঙ্গে রয়েছে সম-সাময়িক আফ্রিকার জীবন যাত্রার লেখ-চিত্র যার নিজস্ব আকর্ষণ ছাড়াও রয়েছে একটি ফ্রেমের মতো মূল বিষয়কে ধারণ করার ভূমিকা। সাফারি এক নতুন ভূবনের দিগন্ত উন্মোচিত করে সমাদৃত হয়ে থাকবে। পাঠকমাত্রই জানেন হাসনাত আবদুল হাই-এর ভ্রমণকাহিনি যেন ছবির এলবাম। বিচিত্র সব দৃশ্য আর নানা মানুষের এক বিশাল ক্যালাইডোস্কোপ। পড়তে পড়তে অতীত ফিরে আসে বর্তমানে, মানুষেরা কথা বলে সজীব হয়ে। শব্দ-বর্ণ-দৃশ্য-গন্ধের যে সমাহার অক্ষরের শৃঙ্খলে বরফ-জমাট তারা মুক্তি পেয়ে চঞ্চল করে দেয় পঞ্চেন্দ্রিয়। যারা লেখকের মতো সৌভাগ্যবান হয়ে দেশ-দেশান্তরে ভ্রমণের সুযোগ পান নি তাদেরকে লেখকের ভ্রমণ-সঙ্গী করার উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি এসব ভ্রমণকাহিনি লিখেছেন। লেখকের অভিজ্ঞতার কিছুটা পাঠককে দিতে চেয়েছেন তিনি। ভেবেছেন আরাম-কেদারায় বসেই পাঠক পেরিয়ে যাক না সাত সমুদ্দুর তেরো নদী। এভাবে হাসনাত আবদুল হাই-এর ভ্রমণ হয়ে উঠতে পারে অনেকের অভিজ্ঞতা।
Hasnat Abdul Hye জন্ম ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বরে, কলকাতায় । পৈত্রিক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার সৈয়দাবাদ গ্রামে। স্কুল শিক্ষা কলকাতা, যশোর, ফরিদপুর শহরে। কলেজ শিক্ষা ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিকস এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষা লাভের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা । ১৯৬৫ সালে সিভিল সার্ভিসে যোগদানের পর প্রাক্তন পাকিস্তান সরকার এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকারের অধীনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং সচিব পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। হাসনাত আবদুল হাই ছাত্র জীবন থেকে সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। ১৯৫৮ সালে ছোটগল্প রচনার মাধ্যমে। ছোটগল্প, উপন্যাস, ভ্রমণ-কাহিনী, শিল্প ও সাহিত্য সমালোচনা এবং নাটক এই সব শাখায় স্বচ্ছন্দে বিচরণ করেছেন চার দশকের অধিককাল ।বাংলা এবং ইংরেজিতে একটি কবিতার বই লিখেছেন জাপানে প্ৰবাস জীবনে। প্ৰকাশিত ছোটগল্প গ্রন্থের সংখ্যা পাঁচ, উপন্যাস পঁচিশ এবং ভ্ৰমণ-কাহিনী ছয় । সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন অলক্ত পুরস্কার, মোহাম্মদ আকরম খাঁ বাংলা একাডেমী পুরস্কার এবং সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৬ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। তাঁর লেখা উপন্যাস সুলতান ডাবলিন আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়।