“লাইলি মজনু" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ বিশ্বপ্রসিদ্ধ কিংবদন্তি অমর প্রেমকাহিনি লাইলি মজনু। বিশ্বের সর্বাধিক আলােচিত প্রেমকাহিনি। প্রায় হাজার বছর ধরে এবং তারও পূর্ব থেকে এই কাহিনি নানাভাবে নানাদেশে নানা ভাষার সাহিত্যে আলােচিত হয়েছে স্বর্গীয় প্রেমের রূপক ও উপমা হিসেবে। আরবী ‘লাইল’ অর্থ ‘রাত' এই শব্দের দ্বারা কালাে বর্ণকে বােঝানাে হয়েছে। অর্থাৎ লাইলির গায়ের রং ছিল কালাে। আর ‘মজনু অর্থ প্রেমােন্মাদ বা পাগল। ফারসি ভাষার প্রসিদ্ধ সুফিকবি আল্লামা অবদুর রহমান জামী পনের শতকে আরবের প্রচলিত কিংবদন্তির ওপর ঐশী প্রেমের রূপক হিসেবে ফার্সি ভাষায় লাইলি মজনু কাব্য রচনা করেন। এমনকি তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল সুফিদের কাব্যেও লাইলি মজনুর অনেক বর্ণনা পাওয়া যায়। ভারতবর্ষে কবি আমির খসরু প্রথম ‘লায়লা ওলা মজনুন' রচনা করেন। এদেশে মধ্যযুগের কবি দৌলত উজির বাহরাম খা বাংলায় লাইলি-মজনু রচনা করেন। এটি মধ্যযুগের একটি রােমান্টিক কাব্য হিসেবে আলােচিত। অনেকের মতে, কবি দৌলত উজির বাহরাম খা ফার্সি ভাষার সুফিকবি আবদুর রহমান জামীর কাব্যের ভাবানুবাদ অবলম্বনে বাংলায় লাইলি মজনু রচনা করেছেন। যুগ যুগ ধরে লাইলি মজনু চরিত্র স্রষ্টাপ্রেমের স্বর্গীয় রূপক ও উপমা হিসেবে নানা ধর্মে নানা গ্রন্থে প্রচলিত প্রেম কাহিনি। এখানে লাইলি মজন পুরুষ ও নারী চরিত্র হলেও প্রকৃতপক্ষে স্রষ্টা ও সৃষ্টি যুগল প্রেমের রহস্য প্রকাশিত হয়েছে। সুফি অর্থে দুই দেহ এক আত্মার মিলন ও বিরহের চিত্র ফুটে উঠেছে। লাইলি মজনু চরিত্রের ভেতর দিয়ে। এই গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে পাঠকগণ অমর স্বর্গীয় কাহিনিকে নতুনরূপে জানতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।