আগুনমুখা! চরের মানুষের জীবন সংগ্রাম আর বেঁচে থাকার এক কল্পকাহিনী। আগুনমুখার জীবন চরের জীবন। নদী আর জলের জীবন। আগুনমুখার জলের ভিতর আগুন জলে। এই আগুনে নিত্যদিন পোড়ে চরের মানুষের জীবন। নদীর ভাড়াগড়ার সাথেই চরের মানুষের জীবন। নদীর ভাড়াগড়ার সাথেই চরের মানুষের জীবনে ভাঙ্গাগড়ার খেলা চলে। চরের বালুর তাপে পুড়ে ছাই হয়ে যায় আগুনমুখার নারীদের জীবন যৌবন। বাল্যবিবাহ শিক্ষা চিকিৎসার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই চরের মানুষ। অন্যদিকে প্রকৃতির সাথে ওদের নিত্য সংগ্রাম। ঝড় তুফান সাইক্লোন ঘূর্ণীঝড় নদীর ভাড়াগড়ার সাথে প্রতিদিন যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে চরের মানুষ। কর্মসংস্থানের অভাব চরের জোতদার মহাজনের ঋনের মিকলে বন্দী চরের সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ। আছে জলদস্যুদের হামলা। এই সবকিছু মিলিয়ে চরের জীবনের নানা কাহিনি নেয়ে রচিত হয়েছে আগুনমুখার গল্প। ঘূর্ণীঝড় তারা’র আগমনী সংবাদে আগুনমুখার দশজন দুঃসাহসীক তরুণ তরুণী তাদের ঘর বাড়ী রক্ষার যে সংগ্রামে লীপ্ত হয়েছিল তারিই একটি চিত্র আগুনমুখা উপন্যাসে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। একইসাথে ওদের প্রেম ভালবাসা জলদস্যুর মোকাবেলা সবকিছুই গল্পাকারে বর্ণীত হয়েছে এই উপন্যাসে। তুলে ধরা হয়েছে শতশত বেঁচে থাকা মান্তা সম্প্রদায়ের জীবন কাহিনী। ঘূর্ণীঝড় তারা’র আগমনী সংবাদে চর রক্ষার দীপ্ত প্রত্যয়ে চরের দশজন তরুণ তরুণীর দুঃসাহষীক কর্মকান্ডই আগুনমুখা উপন্যাসে প্রতিটি পাতায় বর্ণীত হয়েছে।
ভুমিকা বাল্যকাল থেকে সাত নদীর মিলনস্থল বলে খ্যাত বঙ্গোপসাগর সন্নিহিত মাঝি-মাল্লা ও ভ্রমণকারীর মনে ভীতি সৃষ্টিকারী আগুনমুখা নদী সম্পর্কে কত কথা কত কাহিনিই-না-শুনেছি। শুনেছি, সামান্য বায়ুপ্রবাহ হলে আগুমুখা নদী মাঝি-মাল্লাদের জন্য নাকি হয়ে দাঁড়ায় সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত। যে কোনো নৌযান আগুনমুখা অতিক্রমকালে অতি সন্তরপণে তীর ঘেঁষে পাড়ি দিত। বিভিন্ন বর্ণনায় মনে হতো আগুনমুখায় যেন কোনো অপশক্তি বিরাজ করছে। আগুনমুখার তীরে যাব। ঘুরে ফিরে আগুনমুখার বয়ংকর রূপ দেখব বলে কত স্বপ্ন দেখেছি। কিন্তু বাস্তবে কখনো সুযোগ হয়ে ওঠেনি। স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল। ছোটবেলা থেকে এই বড়বেলা পর্যন্ত কাগজপত্রের মাধ্যেই আগুনমুখার সাথে প্রেম জড়িয়ে রইল। একদিন হঠাৎ করেই ওয়াশিংটনে পরিচয় হলো আগুনমুখার মেয়ে নূরজাহান বোসের সাথে। অনেক কথা হলো। আগুনমুখার অনেক গল্প শুনলাম ওনার মুখে। আগুনমুখার প্রতি প্রেমটা যেন আরো বেড়ে গেল। আর আগুনমুখার সেই প্রেম থেকেই লিখবার চেষ্টা করেছি এই আগুনমুখা! উপন্যাসটি। আগুনমুখা! উপনাসটিতে আগুনমুখার দ্বীপের বিভিন্ন চিত্র গল্পাকারে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র। গল্পের প্রয়োজনে বিভিন্ন চরিত্র ও ঘটনা কাল্পনিক ভাবে তৈরি করা হয়েছে। যার সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।
জন্ম কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলায় (বর্তমানে মনােহরগঞ্জ উপজেলা)। শৈশব ও বাল্যকাল কেটেছে বৃহত্তর লাকসাম ও কুমিল্লায় পড়েছেন লাকসাম পাইলট বালিকা বিদ্যালয়, বাবুর বাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়, লাকসাম পাইলট হাইস্কুল, নওয়াব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিনিসােটা রাজ্যের সেন্ট থমাস বিশ্ববিদ্যালয়ে। ব্যবস্থাপনায় মাষ্টার্স অব কমার্স (এমকম) এবং সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এ মাষ্টার্স অব সফটওয়ার সিষ্টেম (এমএসএস) ডিগ্রী নিয়েছেন। গত তিন দকশ ধরেই লেখালেখি সাংবাদিকতার সাথে জড়িত। অনলাইন সংবাদিকতার জগতে পথিকৃতদের অন্যতম। সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন দুই যুগেরও বেশি সময়। প্রকাশিত হয়েছে। গল্প উপন্যাস কবিতা সহ ১৯টি বই। লেখকের সবগুলাে বই প্রকাশিত হয়েছে বাংলা একাডেমি আয়ােজিত বইমেলায়। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, রম্য রচনা, ভ্রমন কাহিনি, শিশু সাহিত্য, চিঠিপত্র, রূপকথার গল্প সহ সাহিত্যের নানা শাখায় সক্রিয়। সাংবাদিকতা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য দেশের বাইরে নানা অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ হিসাবে কর্মরত রয়েছেন।