"তাযকিয়াহ ও ইহসান" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: ইসলাম ও মুসলিমদের সামনে যখনই কোনো সংকটময় অবস্থা ও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা উপস্থিত হয় এবং উক্ত বিষয়ে মীমাংসায় উপনীত হওয়া ও চূড়ান্ত ফল পর্যন্ত পৌঁছা দুরূহ হয়ে পড়ে তখন আল্লাহ তায়ালা আলেমসমাজের মধ্যে নির্ভরযোগ্য লোকের হৃদয়ে ধ্যান সৃষ্টি করে দেন, তারা নিজেদেরকে এ দায়িত্ব পালনে আল্লাহকর্তৃক আদিষ্ট বলে মনে করেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত মনে করেন। এ কার্য সমাধা করার জন্য স্পষ্টভাবে আল্লাহ তায়ালার অদৃশ্য সাহায্য পরিলক্ষিত হয়; হৃদয়ের গভীর থেকে তারা এটি অনুভব করতে থাকেন। একেই আমরা সংঘবদ্ধ স্বর্গীয় প্রেরণা নামে আখ্যায়িত করি। ইসলামের ইতিহাস এর উদাহরণে পরিপূর্ণ। সাইয়েদ আবুল হাসান আলি নদবি রহ. বিভিন্ন কারণে বহুলোকের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন ও তাদের দ্বারা উপকৃত হয়েছেন, যারা কেবল জ্ঞান ও সাহিত্যচর্চার এবং আধুনিক পরিমণ্ডলে বেড়ে উঠেছেন। এই সুযোগ তার সমসাময়িক খুব কম লোকের ভাগ্যেই ঘটেছে। খুব কাছে থেকে অত্যন্ত মনোযোগ-সহকারে তা প্রত্যক্ষ করার সুযোগ তার হয়েছে এবং তারপর তিনি এসব অভিজ্ঞতার আলোকে আরবি ও উর্দুভাষায় বহু প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনার মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার সুযোগ পেয়েছেন। এসব প্রবন্ধ দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও অধ্যয়নের নির্যাস। সেসব প্রবন্ধের সমষ্টিই হচ্ছে আলোচ্য গ্রন্থ ‘তাযকিয়া ও ইহসান’।
বইটি সম্পর্কে নদবি রহ. এর ভাষ্য- ‘গ্রন্থটি মূলত এমনসব বিষয় ও প্রবন্ধের সমষ্টি, যা উপর্যুক্ত বিষয়টি স্পষ্ট করার লক্ষ্যে (আরবি ও উর্দুভাষায়) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে লেখা হয়েছে। বিষয় ও সময়ের ভিন্নতা সত্ত্বেও প্রায় অভিন্ন অর্থের বহু প্রবন্ধ একই মালায় গেঁথে দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে হয়তো কোথাও নিজ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে কোনো মত ও অভিমত ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অথবা জীবন ও চরিত্রের এমন বিশেষ কোনো শূন্যতার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে, যা পূর্ণ করা একান্ত কর্তব্য অথবা আহলে হকের সেই জামাতের পক্ষ থেকে প্রতিহত করা আবশ্যক, যাদের অধিকাংশ সময় সমালোচনা ও ছিদ্রান্বেষণের লক্ষ্য বানানো হয় এবং অধিকাংশ লোক তাদের ব্যাপারে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা, গভীর অধ্যয়ন, পূর্ণ বিশ্লেষণ ও অনুসন্ধান ব্যতিরেকেই বিভিন্ন রকম অযাচিত মন্তব্য করে থাকে।’