"হযরত খাজা বু-আলী শাহ কালান্দারের আত্মদর্শন" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ হযরত খাজা বু-আলী শাহ্ কালান্দারের সুফিতাত্ত্বিক দিওয়ানগুলােতে আপন মুর্শিদের প্রতি আনুগত্য, মহব্বত, প্রেম, ভক্তি, বিনয় ও স্রষ্টা-সৃষ্টির প্রেম, সাকী, শারাব এবং মাস্তির বিষয়গুলাে নানাভাবে ফুটে উঠেছে। যদিও এই প্রেম, সাকী, শারাব ও মাস্তির বিষয়গুলাে নারীঘটিত কোন বিষয় নয়। এই মাদকতা হলাে আপন পীর বা মুর্শিদের প্রতি মহব্বত এবং মুর্শিদের মধ্যস্থতায় নবীর তরিকা মতে তাঁর গভীর প্রেম-মহব্বতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের ধ্যানে সদাসর্বদা নিজেকে মজনুর হালতে ডুবিয়ে রাখা। এই তিন প্রেমে একাত্ম হয়ে আল্লাহর প্রেম মদিরা পানের অবস্থাই বু-আলী শাহ্ কালান্দারের আত্মদর্শন। রহস্যজ্ঞানের গভীর সমুদ্রে ডুবে গিয়ে খাজা বু-আলী প্রেমাস্পদের স্বরূপ দর্শনের জন্য আশেকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “হাযার সেজদেহ কে ইয়ারান বসুরত তু বরেন্দ ওয়ালে যে বাগ ওফায়ে তু মেওয়াহ নখােরে॥” হে সম্মানিত আশেক! তুমি তাে তােমার বন্ধুর চেহারার অবয়বকে হাজারাে সেজদাহ করে যাচ্ছ। তুমি কি জানাে তার হাকিকত কি? তুমি কি তার প্রতিজ্ঞার বাগান থেকে কোন ফল খেয়েছ? এ ফলের রহস্য সবার অগােচরে রয়ে গেছে। এভাবে খাজা বু-আলী শাহ কালান্দার (রহ.) রহস্যলােকের সেই বিষয়গুলাে সুনিপুণ শিল্পীর তুলির মতাে আশেক-প্রেমিকদের সম্মুখে উপস্থাপন করেছেন। যা যেকোন মুর্শিদ প্রেমিকসত্তাকে হতবিহ্বল করে দেয়। প্রেমােন্মাদনা জাগিয়ে তােলে অন্তর্মনে। গ্রন্থটি সকল প্রেমিকসত্তাকে আন্দোলিত ও পরিতৃপ্ত করতে সক্ষম হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
সৈয়দ মোস্তাক আহ্মাদের জন্ম ১৯৮২ সালের ১ জানুয়ারি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর গ্রামে। তার পিতা মাওলানা মুহাম্মদ তমিজ উদ্দীন (র.) ছিলেন একজন পীর ও আধ্যাত্মিক পুরুষ। তার মাতা মনোয়ারা বেগমও ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে আগত। এরকম সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান মোস্তাক আহ্মাদ এর ভাগ্য যেন নির্ধারিতই ছিল যে তিনি বড় হয়ে ধর্ম ও সুফি দর্শন নিয়ে লিখবেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের কল্যাণে শৈশব থেকে তার ধর্মীয় শিক্ষার ভিত মজবুত হয়। পাশাপাশি সুফি দর্শন, মরমী দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ইত্যাদি বিষয়েও পারিবারিকভাবে শিক্ষা লাভ করেন। তাই তো মোস্তাক আহ্মাদ এর বই সমূহ আধ্যাত্মিকতা ও দর্শন থেকে শুরু করে ধর্মীয় ইতিহাস, অনুশাসন, আত্মোন্নয়ন, মানবজীবন ও দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান ও অনুপ্রেরণার অফুরন্ত উৎস। মোস্তাক আহমাদ একজন দক্ষ মোটিভেটর। মেডিটেশন ও নানাবিধ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং ব্যক্তিগত উন্নয়ন সাধন করতে সক্ষম। বর্তমানে ‘ড্রিমওয়ে ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ’ এর ড্রিমওয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তথা সিইও হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। মানবোন্নয়ন, ব্যক্তিক উৎকর্ষ সাধন, সুফি ও মরমী দর্শন নিয়ে দেড় শতাধিক পাঠকপ্রিয় বই লিখেছেন তিনি। মোস্তাক আহমাদ এর বই সমগ্র ব্যক্তিজীবনে সমৃদ্ধি ও সাফল্যের চূড়ায় আরোহণের প্রেরণা দেয়, ব্যক্তিমনের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের পথ দেখায়, সাফল্যের আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষুধা জাগ্রত করে। ‘দ্য ম্যাজিক অব থিংকিং বিগ’, ‘বুদ্ধি ও বিনিয়োগ শেয়ার ব্যবসায় সেরা সাফল্য’, ‘মেধা বিকাশের সহজ উপায়’, ‘ইতিবাচক চিন্তার শক্তি’, ‘বিজনেস স্কুল’, ‘মাওলানা রুমীর আত্মদর্শন’, ‘লালন সমগ্র’, ‘টাকা ধরার কৌশল’, ‘দিওয়ান-ই-হাফিজ’, ‘দিওয়ান-ই-শামস তাবরিজ’, ‘আত্মোন্নয়ন ও মেডিটেশন’ ইত্যাদি তার কিছু জনপ্রিয় বই।