মৈনাকের মন ভাল নেই। আনন্দে ভেসে ভেসে চিত্রশিল্পীর মন কখনো বিষন্ন হওয়া খুবই স্বাভাবিক। চারদিকের বিধ্বস্ত সমাজের অভিঘাতে বিপর্যস্ত মৈনাককে আপন চেতনালোকে স্নান করে প্রতিনিয়ত ইজের ও তুলি হাতে ক্যানভাসের সামনে উঠে দাঁড়াতে হয়। আজ হঠাৎ নীলমের টেলিফোনে বিষন্ন মন। অনেক দিন পর নীলম ফোন করেছে। টেলিফোনে ওর বড় অভিযোগ, নানা রকম কথা। তার মেয়েকে এ ভাবে বিভ্রান্ত করতে পারে না সে। তারপরও নিরুপায় মৈনাক। স্টুডিওতে অবিরাম নূপুরের ধ্বনি এবং সমান তালে পায়ের আওয়াজ। অনঙ্গ একবার শুরু করলে আর যেন সহজে থামতে চায় না, এমন কি নিজেকে থামাতেও পারেনা। নৃত্যের চেতনালোকে ভাসতে ভাসতে কোথাও এক আদিম নারীর কাছে চলে যায়, আদিম মানবী হয়ে যায় সে। সেখানে হিংস্র পশুকে বধ করে উদরপূর্ণ শেষে থামতে পারে শুধু। সেখানে নীলম যা-ই শাসন করুক, অনঙ্গকে সে ভালবাসে এবং আদিম গুহায় পৌছান পর্যন্ত ভালবেসে যাবে। তারপর নারী ও পুরুষের ছুটি হবে মুক্ত হাওয়ায় এবং দাসত্বের চির অবসান। অনঙ্গ থামতে পারে না বলেই ওর প্রতি মৈনাকের এত ভালবাসা। অনঙ্গর নৃত্যের ঐকতানে মন্ত্রমুগ্ধ মৈনাক আদিমতার ঘ্রাণ খুঁজে বিষন্ন মনেও স্টুডিওতে ফিরে এসে ফের ক্যানভাসের সামনে দাঁড়ায়।