"অরিজিন" বইয়ের পিছনের কভারের লেখা: হার্ভার্ডের সিম্বােলজি আর ধর্মীয় আইকনােলজির প্রফেসর রবার্ট ল্যাংডন, এমন এক আবিষ্কারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে স্পেনের বিলবাউ-এর গুগেনহাইম। মিউজিয়ামে হাজির হলেন, যা নাকি ‘বিজ্ঞানের চেহারাটা চিরতরে পালটে দেবে! আমন্ত্রণকারী তার প্রিয় বন্ধু এবং প্রাক্তন ছাত্র, এডমন্ড কির্শ: চল্লিশ বছর বয়সী এক তুখােড় প্রযুক্তিবিদ! চোখ ধাঁধানাে সব আবিষ্কার আর দুঃসাহসিক সব ভবিষ্যদ্বাণীর কল্যাণে সে আজ বিশ্বের অন্যতম আলােচিত ব্যক্তিত্ব। আজ সন্ধ্যায়ও এর-কোনাে ব্যতিক্রম হতে যাচ্ছে না। তার দাবি, আজ সে এমন এক বিস্ময়কর আবিষ্কারের কথা সবাইকে জানাতে যাচ্ছে, যা গােটা মানব অস্তিত্বের মৌলিক বিষয়গুলােকেই চ্যালেঞ্জ করে বসবে। কিন্তু কিৰ্শ তার সেই মহামূল্যবান আবিষ্কারটি ঘােষণা করতে পারার আগেই হঠাৎ গােছানাে সন্ধ্যাটি এলােমেলাে হয়ে গেল। মুহুর্তেই নিদারুণ হুরােহুরি পড়ে গেল। ল্যাংডন আর উপস্থিত কয়েকশাে অতিথিদের মাঝে। প্রাণের মায়ায় পালাতে বাধ্য হলাে ল্যাংডন; সাথে গুগেনহাইম মিউজিয়ামের পরিচালক আর স্পেনের ক্রাউন প্রিন্সের সুন্দরী বাগদত্তা, মিস আমব্রা ভিদাল। এরপর কির্শের সেই। অপ্রকাশিত রহস্য ভেদ করে অপরিহার্য এক পাসওয়ার্ড-এর সন্ধানে তারা দুজন মিলে বার্সেলােনায় পালাল; বিপজ্জনক এক অভিযানে। শত্রু প্রত্যেক পদক্ষেপে ওদের চেয়ে এক কদম এগিয়ে! ল্যাংডন আর আমব্রা ভিদালকে এগুতে হবে বার্সেলােনার গােলকধাধা পেরিয়ে। হেয়ালিভরা সব প্রতীক আর একগাদা বিভ্রান্তিকর মর্ডান আর্টে ভরা পথ ধরে সূত্র খুঁজতে খুঁজতে তারা দুজন এমন এক দুনিয়া-কাঁপানাে সত্যের মুখােমুখি হলাে, যা আজ পর্যন্ত। লােকচক্ষুর অন্তরালেই চাপা পড়েছিল।
মার্কিন থ্রিলার লেখক ড্যানিয়েল গেরহার্ড ব্রাউনের জন্ম ১৯৬৪ সালের ২২ জুন। ড্যান ব্রাউন নামেই বিখ্যাত এই লেখকের জন্মস্থান যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের এক্সিটারে। তাঁর বাবা বিখ্যাত গণিত শিক্ষক রিচার্ড জি. ব্রাউন ফিলিপস এক্সিটার একাডেমিতে পড়াতেন। এই সূত্রে ড্যান এই একাডেমি থেকেই গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এরপর আমহার্স্ট কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন তিনি। ছোটবেলায় সংগীতের প্রতি ঝোঁক থাকায় ১৯৮৬ সালে পেশাদার সংগীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হন। ১৯৯৪ সালে সিডনি শেলডন এর লেখনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ড্যান লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। উপন্যাস হিসেবে ড্যান ব্রাউন এর বই 'ডিজিটাল ফোরট্রেস' প্রকাশিত হয় ১৯৯৬ সালে, সেটাই ছিল তাঁর প্রথম লেখা। পাঠক বইটি সাদরে গ্রহণ করায় আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০০৩ সালে প্রকাশিত 'দ্য ভিঞ্চি কোড' বিশ্বজুড়ে তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়। ক্রিপ্টোগ্রাফি বা সাংকেতিক চিহ্নের রহস্যময়তা, কী, কোড এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলোর সন্নিবেশ তাঁর রচনাগুলোকে করেছে আরো আকর্ষণীয়। রবার্ট ল্যাংডনের চরিত্রটিকে কেন্দ্রে রেখে তিনি দুঃসাহসিক সব অভিযানের রূপায়ণ করেছেন তাঁর লেখায়। ড্যান ব্রাউন এর বই সমূহ বিশ্বজোড়া থ্রিলার পাঠকদের জন্য যেন সোনার খনি। তাঁর রচনায় বুঁদ হয়ে থাকা পাঠকেরা সাংকেতিক রহস্যময়তার জন্য ড্যান এর রচনার সমাদর করেন। পাঠকনন্দিত ড্যান ব্রাউন এর বই সমগ্র হলো 'ডিসেপশন পয়েন্ট', 'এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস', 'দ্য লস্ট সিম্বল', ' ইনফার্নো' ও 'অরিজিন'। তাঁর লেখা বই বিশ্বের ৫২টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং বিক্রি হয়েছে ২০০ মিলিয়নেরও বেশি কপি। এছাড়াও 'এঞ্জেলস এন্ড ডেমন্স', 'দ্য ভিঞ্চি কোড', এবং 'ইনফার্নো' পেয়েছে চলচ্চিত্র রূপ। যদিও তাঁর রচনা নিয়ে ধর্মতত্ত্ববিদেরা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন, তবে ড্যান তাঁর রচনাকে ধর্মের রহস্যময়তার নতুন এক দিক হিসেবেই বর্ণনা করেছেন।