"মৃত্যূর পরে অনন্তজীবন বা না ফেরা দেশের চিত্র" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: দুনিয়ার জীবনে কেউ চিরস্থায়ী নয়। এমনকি নবীরাসূলগণও দুনিয়ায় চিরস্থায়ীভাবে বেঁচে থাকতে পারেনি । কিন্তু অতীব দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় এই যে, বর্তমানকালে কিছু সংখ্যক মানুষ ধারণা করে, পৃথিবীর এই জীবনই শেষ জীবন। পুনরায় আর জীবন লাভ করা যাবে না তথা পরকাল বলে কিছু নেই । তবে মানুষের এই ধারণা নতুন কিছু নয় । একই ধরনের ধারণা সুদূর অতীত কাল থেকেই এক শ্রেণির ভােগবাদী পরকাল অবিশ্বাসী মানুষ পােষণ করে আসছে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সময়ে ইসলামী জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, সে সময়েও মানুষের ধারণা ছিল, মানুষকে পৃথিবীতে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মানুষ এখানে যা ইচ্ছে তাই করবে। এমন কোনাে উচ্চশক্তির অস্তিত্ব নেই, যার কাছে মানুষ তার যাবতীয় কর্মকাণ্ডের হিসাব দিতে বাধ্য। মৃত্যুর পরে আর কোনাে জীবন নেই। পৃথিবীতে সংঘটিত কোনাে কর্মকাণ্ডের হিসাব কারাে কাছেই দিতে হবে না । এই ধারণা মারাত্মক ভুল । পরকাল অবশ্যই সংঘটিত হবে এবং সেদিন সকল কাজের জবাবদিহি মহান আল্লাহর কাছে করতে হবে । পরকালে জবাবদিহির অনুভূতি ব্যতীত মানুষ কোনােক্রমেই পৃথিবীতে সৎ-চরিত্রবান হতে পারে না। “জীবন এবং মৃত্যু-এগুলাে খুব সুন্দর এবং মধুর কোনােও বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছে। তবে কীভাবে তা আমি জানি।” এ কথাগুলাে বলেছেন মার্কিন অভিনেত্রী ও গায়িকা গ্লোরিয়া সােয়ানসন। মৃত্যু নিয়ে মানুষ যেমন কৌতুহলী, তেমনই অনাগ্রহী । নিশ্চিত, দুর্দশা নিয়ে মানুষ বেঁচে থাকতে চায়, তবু অনিশ্চিত স্বর্গসুখের জন্য মৃত্যুকে বরণ করতে চায় না। যদিও বুদ্ধ বলেছেন, “বিচক্ষণতার সাথে জীবন যাপন করলে মৃত্যুকে ভয় পাবার কোনােই কারণ নেই।” কঠিন শর্ত! কেমন বিচক্ষণতা তা তাে পরিষ্কার কেউ জানে না। আলােচ্য গ্রন্থে মানুষের ইহলৌকিক জীবন ও পারলৌকিক জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতির কথা বিস্তারিত আলােচনা করা হয়েছে।