"ইমোশনাল সুপারহিরো" বইয়ের ভূমিকাঃ “ইমােশনাল সুপারহিরাে” দুইজন মানুষের ডায়েরির কথাবার্তা যার মধ্যে একটি যােগসূত্র স্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। একজন হচ্ছেন হাসান সাহেব, প্রায় ষাট বছর বয়সের এই লােকের জীবনে ঘটে যাওয়া বলার মত আছে দুটি গল্প। তবে গল্পগুলাে কেউ জানে না, তিনিও বলেন না। আরেকদিকে প্রায় ত্রিশ বছর বয়সের সিয়াম, যার আপাতদৃষ্টিতে বলার মত কোন গল্প হয়ত নেই। দুইজনের দেখা হয় ট্রেন ভ্রমণে। ট্রেন থেকে নামার সময় হাসান স্যারের ফেলে যাওয়া ডায়েরিতে লেখা ছিল ‘ইমােশনাল সুপারহিরাে'। সিয়ামের হঠাৎ মনে পড়ে ভার্সিটি জীবনে তাদের ক্রিকেট টিমের নামও ছিল ‘ইমােশনাল সুপারহিরাে’। সেই নামের সাথে কি তাহলে এই ডায়েরির কোন যােগসূত্র আছে? হাসান স্যারের ডায়েরিতে কিছু কবিতা লেখা, আর কারাে জীবনের কোন কোন ঘটনা লেখা। সিয়ামের একদিন মনে হয় তারও বলার মত গল্প আছে। সিয়াম নিজেও একদিন নিজের গল্প লেখা শুরু করে, তার ডায়েরির নামও থাকে ‘ইমােশনাল সুপারহিরাে'। দুটা ডায়েরির মধ্যে যােগসূত্র আছে এবং ডায়েরি দুটি একদিন একই লাইব্রেরিতে শােভা পায়। ২০১৫ বইমেলায় প্রকাশিত রাফখাতা নামে আমার একটা উপন্যাস ছিল, ছেলেদের জীবনের গল্প। ইমােশনাল সুপারহিরােও ছেলেদের গল্প, রাফখাতার মত প্রায় একই ধাঁচের তবে ভিন্ন গল্প। ছেলেদের জীবনের আক্ষেপ, ভুল করে ফেলা জীবনকে শুধরানাের চেষ্টার গল্প। কিন্তু জীবন কোন সরলরৈখিক রাস্তা না। জীবনের পথে হাঁটতে গেলে মানুষ ভুল করে। কেউ সেই ভুল শুধরায়, কেউ ভুলগুলােকে সাথে নিয়েই সামনে এগিয়ে যায়, কেউ আক্ষেপ করে। হাসান স্যারের ডায়েরি পড়ে সিয়ামের মনে হয় জীবনকে সে যেভাবে দেখে এসেছে জীবন আসলে সেরকম না। জীবনকে সে অর্থবহ করার আপ্রাণ চেষ্টা করে তখন। ‘ইমােশনাল সুপারহিরাে’ গল্পটি যেভাবে লিখতে চেয়েছিলাম লেখার পর মনে হল তার থেকে দূরে চলে গেছি। তারপরেও কিছু একটা গল্প দাঁড়িয়েছে হয়ত; এই ভরসায় প্রকাশককে বুঝিয়ে দিলাম। গল্পে দুলাইনের কবিতা কোথাও ব্যবহার করা হয়েছে যা আমার না, লাইন দুটি সাদাত হােসাইনের। আমাদের দুইজনের শিকড় একই জায়গার (একই গ্রাম, গ্রামের নাম কয়ারিয়া)। দেশী ভাইয়ের থেকে দুটি লাইন নেওয়ার হক আছে বলেই মনে করি। বইটা যারা পড়ার চেষ্টা করবেন, তাদের বইয়ের ভুল ভ্রান্তি আর বই পড়াকালীন সৃষ্ট অসন্তুষ্টির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। বইটি পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করলাম। ক্ষমা চাওয়াতে আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশে আমি কখনাে দোষের কিছু দেখি না।
রাসয়াত রহমান হচ্ছে ভাল নাম, ডাক নাম জিকো। জন্মস্থানর ঢাকা শহরে বেইলিরোডে। প্রথম স্কুল-বেইলি প্রিপারেটরী স্কুল । ক্লাস ওয়ান থেকে টেন পর্যন্ত গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল । কলেজ ছিল ঢাকা কলেজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থ বিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিনান্স থেকে এমবিএ (ইভিনিং) করেছেন। ব্যাংক কর্মকর্তা হিসেবে চাকরী শুরু করেছেন ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। মা-বাবা দুজনেই গত হয়েছেন। স্ত্রী মাকসুদা আজীজ ও একমাত্র সন্তান অর্হ অপরাজিতা রাসয়াতকে নিয়েই তার পরিবার । মানুষ হিসেবে তিনি কখনো খুব গম্ভীর কখনো খুবই মজার