এক বইয়ে ১১টি ভূতের গল্প আছে। এ যেন ভূতের গল্পের খনি। ভূতের গল্প মানেই গা ছম ছম করা শিহরণ। শিশু-কিশোরদের গল্পে আড্ডায় প্রথম পছন্দ হলো ভূতের গল্প। ভূতের গল্পÑকে কতটা জানে তাও একটি গর্বের বিষয় বটে। যতই এই গল্প শোনা বা পড়া হোক না কেন তাও যেন স্বাদ মেটে না। বিএম বরকতউল্লাহ্র লেখা ‘হাজার ভূতের মজার গল্প’ বইটি প্রকাশিত হয়েছে ২০১৯ সালে। প্রতিটি গল্পের সাথেই রয়েছে একাধিক ছবি। এ ছবিগুলো গল্পের সাথে মিল রেখে আঁকা। সূচিবদ্ধ গল্পগুলো গুলোÑভূত ও বৈদ্য, কঙ্কাল ও এক বীরের গল্প, ভূতের ফুঁ, ভূত ও বৃত্ত, ভূত ঢুকেছে বইমেলাতে, ভেল্কিবাজি, ভূতের খপ্পরে শিরু কাকা, ভূতের হাসি, বিবেকের ছায়া, ভূতের নাম হৌ হৌ এবং মন্টির ভূত ও ভবিষ্যৎ। বইয়ের শেষ গল্প ‘মন্টির ভূত ও ভবিষ্যৎ’ গল্পটিই যেন সব শিশু-কিশোরের জন্য প্রযোজ্য। মন্টি তার বাবার কাছে বায়না ধরছে ভূত দেখার। কিন্তু তার বাবা ভূত নেই বললেও সে বিশ্বাস করতে চায় না। এরপর একদিন তারা ঠিক করে ভূত দেখতে শ্মশানে যাবে। যেই কথা সেই কাজ। বাপ-বেটা মিলে ভূত দেখতে বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু শ্মশানে গিয়ে অনেক সময় বসে থেকে দেখতে পায় একটা শিয়াল। মন্টি সেই শিয়ালটিকে ভূত বলে তার বাবার কাছে। আর ভূত দেখা হয়ে গেছে বলে তারা বাড়ি ফিরে আসে। পরের দিন সবাই ছুটে আসে ভূতের গল্প শুনতে। মন্টিও তাদের নানাভাবে সেই ভূতের গল্প শোনায়। এসব দেখে মন্টির বাবা মন্টির মাকে বলে, তোমার ছেলে বড় হলে একটা গপ্পবাজ হবে। কিন্তু মন্টির মা বলে, না, আমার ছেলে বড় হলে লেখক হবে। শিশু-কিশোরের মনোজগৎ তৈরিতে ও তাদের কল্পনার বিকাশে এসব ভূতুড়ে গল্প তাদের সৃষ্টিশীল করে তোলে। তবে মনে রাখতে হবে, কোনো কিছুর প্রতি আসক্তি মঙ্গলজনক নয়। কেবল আনন্দ ও সময় কাটানোর জন্যই এসব গল্প নিয়ে মাতামাতি করা যেতে পারে; কিন্তু বাস্তবতাকে উপক্ষে করে শুধু কল্পনা দিয়ে জীবনে বড় হওয়া যায় না। গ্রাম আর শহুরের ভূতের গল্প পড়ে পড়ে এক অদ্ভুত অনুভূতি পাওয়া যাবে এ বইটিতে।