"গদ্যসমগ্র ৩" ফ্ল্যাপে লেখা কথা: মহাদেব সাহার গদ্য তাঁর কবিতার মতােই লাবণ্যময়, চিত্তগ্রাহী, যেখানে নিশ্চিতভাবেই যুক্ত হয়েছে যুক্তি ও বিশ্লেষণের আলােকে গড়ে ওঠা সজীব ভাস্বর জীবনচিত্র, অন্বেষণ ও অনুসন্ধিৎসার পথে এই সব চিন্তা হয়ে উঠেছে আরও গভীর, সংহত ও তীর্যক। ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘আনন্দের মৃত্যু নেই, রবীন্দ্রনাথ ও আধুনিক কবিতার অনুপম ভাষ্য; তাঁর গদ্যরচনার একটি প্রধান লক্ষণ মীমাংসা নয়, অন্বেষণ, নিজের সিদ্ধান্ত নয়, অন্যের মতাে ও বিচারকেই নিজের ভাবনাসূত্রে মিলিয়ে দেখার প্রয়াস; এটি নিশ্চিত যে কঠিন যুক্তি ব্যাখ্যার চেয়ে তিনি অধিক প্রাধান্য দেন উপলব্ধি ও আবিষ্কারে, এজন্য তাঁর মন থেকে কৌতূহলে উদগ্রীব, সক্রিয়, চৈতন্যের দুয়ার থাকে উন্মুক্ত। একইসঙ্গে কবিতা, প্রকৃতি, জীবন ও সমাজ প্রতিনিয়তই হয়ে ওঠে তাঁর চিন্তা ও চর্চার বিষয়, মানবতাবাদী, গণতান্ত্রিক চেতনার অধিকারী রূপে সমাজ ও তার অগ্রসরমান ভাবনার সাথে তার নিবিড় সম্পৃক্ততা এই গদ্য রচনাকে করে তুলেছে। আবেদনময়; জীবনের বহুতল স্পর্শ করার প্রয়াস এখানে যেমন চোখে পড়ে তেমনি দেখা যায় নিরন্তর জিজ্ঞাসা ও প্রশ্নবাদিতার পথে চলার অভিনব অভীপ্সা, যা নিশ্চিতভাবেই এক বিরল গুণ। এইসব রচনা এক ধ্যানী কবির অভিনব অনুসন্ধান, কবির লেখা পৃথক গদ্য।
Mahadeb Shaha ১৯৪৪ সালের ৫ আগস্ট সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া গ্রামে পৈতৃক বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম গদাধর সাহা এবং মাতা বিরাজমোহিনী সাহা। সাহিত্যনুরাগী পিতা গদাধর সাহার বাড়িতে আসত মাসিক বসুমতী সংবাদ, দৈনিক লোকসেবক, বাই উইকলি অমৃতবাজার পত্রিকা। কলকাতা থেকে আনা হতো পিএম. বাগচী ও গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তীকালের একজন অন্যতম প্রধান কবি। তিনি তাঁর সাহিত্যিক অবদান দিয়ে সব ধরনের পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। তিনিে রোম্যান্টিক গীতিকবিতার জন্য জনপ্রিয়। তার কবিতা অপরিশ্রুত আবেগের ঘনীভূত প্রকাশে তীব্র। তিনি জীবিকাসূত্রে একজন সাংবাদিক ছিলেন, এবং দীর্ঘকাল দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৬ থেকে তিনি কানাডা প্রবাসী।